৩০ মে, ২০২০ ১৮:৩৯

বগুড়ায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

বগুড়ায় দিন দিন করোনা নিয়ে সংকট আরো বড় হতে চলেছে। জেলায় গত দুই মাসে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েছে হু হু করে। ১ এপ্রিল প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর চলতি মে মাস শেষে জেলায় এখন করোনা আক্রান্ত ২৯৩ জন। এরমধ্যে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২০০ জন। বাকিরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ফিরেছেন।

বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বগুড়ায়। আক্রান্তদের মধ্যে বয়সে তরুণরই বেশি সংখ্যা পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা ফেরতের সংখ্যার চেয়ে স্থানীয়ভাবে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। জেলায় গত ২৯ মে পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৭০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৬৭টি নমুনা।

এরমধ্যে পজিটিভ হয়েছে ২৯৩টি। আর ৩০ মে পর্যস্ত সুস্থ হয়েছে ২০ জন। মারা গেছে ১ জন। জেলায় প্রথম ১ এপ্রিল করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে বাড়তে বাড়তে তিনশোর কাছে পৌঁছেছে। জেলা সদরের বাজার সরানো, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথা বলা, প্রচার প্রচারণা করা হলেও এখন সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আক্রান্তদের পরিবার থেকে শুরু হয়ে আশপাশের পর এখন বাজার থেকেও করোনা শনাক্ত হতে শুরু করেছে।

বগুড়ার চাষিবাজার নামে মাছের বাজার থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ জনে। সামাজিকভাবে আক্রান্ত হয়েছে বগুড়া পুলিশের প্রায় আরো ২৫ জনের মত সদস্য। আক্রান্ত হয়েছে ২০ জনের মত কারারক্ষীও। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছে একাধিক ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্র্মী, ট্রাক চালক, ঢাকা ফেরত গার্মেন্ট কর্মী, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ কয়েকটি পেশার মানুষ। আক্রান্তদের কাছ থেকে প্রথমে তার পরিবারের কোন না কোন সদস্য এবং সেই সদস্য থেকে আশপাশের কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে সংখ্যা বাড়ছে।

সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্য বিধি না মানার কারণেই অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। বগুড়ায় ২১ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে সীমিত আকারে বিপনি বিতান খোলার পর ৩০ মে থেকে আবারো কঠোর করা হয়। 

বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শফিক আমিন কাজল জানান, হাসপাতালে রোগির সংখ্যা বাড়ছে। আগে রোগি কম থাকলেও এখন রোগীর চাপ বাড়ছে। স্থানীয়ভাবে সংক্রমণও বাড়ছে। 
বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ টি এম নুরুজ্জামান জানান, করোনা পজেটিভ হলেই হাসপাতালে নিতে হবে এমন নয়। যাদের শ্বাসকষ্ট, তীব্র জ্বর, গলাব্যাথা রয়েছে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। আর যাদের তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না বা কোন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না তাদেরকে বাসায় থেকে আইসোলেশন থাকতে হবে। পরে তাদের আবারো পরীক্ষা করা হবে। 

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, বগুড়ায় চিকিৎসকরা যতটা পারছেন দায়িত্ব পালন করছেন। বগুড়ার সকল ডাক্তারগণ একটি সুনির্দিষ্ট রোস্টার মেইনটেইন করে কাজ করছেন। জেলায় এখন পর্যন্ত ২০ জন সুস্থ্য ও করোনায় একজন মারা গেছে। জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৯৩ জন। সর্বশেষ ২৯ মে আক্রান্ত হয় ১৮ জন। এরমধ্যে ১ জন ডাক্তার, ৫ জন কারারক্ষী, ২ জন পুলিশ কন্সটেবলও রয়েছে। বগুড়ায় সামাজিক সংক্রমণ বেড়েছে আগের থেকে বেশি। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর