শরীয়তপুরের জাজিরায় রিয়াজুল ইসলাম ইবু (২৮) নামে এক মোটরসাইকেল চালককে চোখে মুখে কিল ঘুষ মেরে ও গলায় বৈদ্যুতিক তার পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একদল মোটরসাইকেল চোর চক্রের বিরুদ্ধে। গত (৩০ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা তস্তারকান্দি গ্রামের পদ্মা সেতুর ফাঁকা সড়কের পাশের ঝোঁপঝাঁড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রিয়াজুল ইসলাম ইবু মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর পাঁচখোলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন খানের ছেলে। এ ব্যাপারে আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে শরীয়তপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম. আশরাফুজ্জামান ।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এসএম মিজানুর রহমান, শরীয়তপুর ডিবি পুলিশের ওসি সাইফুল আলম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) জানান, স্ত্রী নিপা আক্তারের সিজারের টাকা সংগ্রহ করতে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন রিয়াজুল ইসলাম ইবু। গত (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রিয়াজুল তার মোটরসাইকেল নিয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুইজন যাত্রি নিয়ে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। রিয়াজুলকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী নিপা আক্তার মাদারীপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী (জিডি) করেন।
মোটরসাইকেল যাত্রি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাদিরপুর তাহের আকনকান্দি গ্রামের মুজাফ্ফর মৃধার ছেলে হৃদয় মৃধা (২৮) ও মালেক মোল্লার ছেলে সুলতান মোল্লার (২৫) মোবাইল নম্বর সূত্র ধরে তাদের খোঁজ করা হয়। কিন্তু তারা পলাতক থাকায় হৃদয়ের মা নাহার বেগম (৪০) ও সুলতান মোল্লার ভাই জসিম মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদারীপুর থানায় নেয়া হয়।
নাহার ও জসিমের তথ্য মতে জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা তস্তারকান্দি গ্রামের পদ্মা সেতুর ফাঁকা সড়কের পাশের ঝোপঝাড় থেকে গত (৩০ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে (৩১ জুলাই) রিয়াজুলের বাবা আনোয়ার হোসেন খান বাদী হয়ে জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার (৩ আগস্ট) ভোর রাত ৪টার দিকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানা এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি হৃদয় মৃধাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চুরি হওয়া মোটরসাইকেল, বিক্রির নগদ ১০ হাজার টাকা, রিয়াজুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আসামিদের সহযোগি রাজিবের মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়। রিয়াজুলের হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে বলে জানান এসপি।
তিনি জানান, এ হত্যার সঙ্গে যারা জরিত তাদের সঠিক বিচার হোক আমরা চাই। আর যাকে হত্যা করা হয়েছে তার নবজাতক ছেলের খাদ্য, শিক্ষাসহ সব বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা পুলিশ দায়িত্ব নেবে।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ