প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। চলছে রঙ তুলির আঁচড়। ব্যস্ত সময় কাটছে মৃৎ শিল্পীদের। তবে নেই উৎসবের আমেজ। আগ্রহ থাকলেও আয়োজনে আছে নানা সীমাবদ্ধতা। মন্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করে। করোনার সংক্রমণ এড়াতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। তবে সাজসজ্জাকরণ, আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল নির্মাণ হয়েছে আগেরমত। করোনার কারণে এবার দুর্গাপূজা হবে সার্তিক শুদ্ধতায় বলছেন রাঙামাটি জেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পার্বত্যাঞ্চলে শারদীয় দুর্গোৎসব। রাঙামাটি জেলার ১০টি উপজেলার মন্দিরে মন্দিরে চলছে ছোট পরিসরে দুর্গোৎসবের আয়োজন। তবে নেই বড় প্রতিমার চাহিদা। তাই ছোট প্রতিমা দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সারতে চায় কেউ কেউ। তাই পূজা ঘনিয়ে আসলেও করোনার সংক্রমণের শঙ্কায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গায়ে লাগেনি উৎসবের আমেজ।
এবার পূজা উপলক্ষে শহরসহ জেলায় ৪৩ পূজামন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সার্বজনীন উৎসবের অংশে আগামী ২৩ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এরপর ২৪ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২৫ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, কুমারী ও সন্ধিপূজা, ২৬ অক্টোবর একই দিন মহানবমী ও মহাদশমী পালিত হলেও প্রতিমা নিরঞ্জন হবে ২৭ অক্টোবর। ওইদিন বিজয়া শোভাযাত্রা ও কাপ্তাই লেকে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সার্বজনীন কর্মসূচির অংশে শেষ হবে বর্ণিল শারদীয় দূর্গোৎসব।
রাঙামাটি কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নন্দন কুমার দে বলেন, মহালয়ায় দুর্গতিনাশিনী দেবী দূর্গার মর্ত্যে আগমন করেছেন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেবী অর্চনা। এবার মর্ত্যে দেবী দূর্গার আগমন হয়েছে গজে আর যাবেন নৌকায়। দেবির আগমনে শারদীয় দুর্গোৎসব মধ্যে দিয়ে বিদায় নিতে পারে করোনা মহামরি মনে করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
করোনার কারণে এবার সার্তিক শুদ্ধতায় হবে দুর্গাপূজা বলছেন রাঙামাটি পূজা উদযাপন জেলা কমিটির সভাপতি বাদল চন্দ্র দে। তিনি বলেছেন, করোনার কারণে দুর্গোৎসবে কিছুটা কাটছাট করা হয়েছে। মন্দিরগুলোতে লোক সমাগমের ব্যাপারে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। করোনার কারণে এবার ভার্চুয়াল মিডিয়ার মাধ্যমেও দেওয়া যাবে অঞ্জিলি।
তবে করোনর সংক্রমণে যদি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, ঠিক আগের মত সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এ দুর্গোৎসব পালন করতে পারবে বলে মন করছেন রাঙামাটি পূজা উদযাপন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন কান্তি মহাজন। তিনি বলেছেন, শত শত বছর ধরে বাঙালী হিন্দুরা উৎসব মুখর পরিবেশে এ দুর্গোৎসব পালন করে আসছে। করোনার কারণে এবার উৎসব অনেকটা ম্লান করে দিয়েছে। সবে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হওয়া যায় তাহলে উৎসবের আমেজ আগের মত থাকবে।
অন্যদিকে রাঙামাটি শহরসহ জেলার ১০টি উপজেলার প্রতিটি মণ্ডপে সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিতসহ পূজা শান্তি-শৃঙ্খলাপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে জেলা পুলিশ সুপার।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন