ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে চলতি আমন মৌসুমে পোকা মাকড়ের ক্ষতির হাত থেকে ফসল রক্ষায় কীটনাশকের পরিবর্তে কৃষকদের আলোক ফাঁদ ও পাচিংয়ের ব্যবহারে উৎসাহিত করছে স্থানীয় উপজেলা কৃষি বিভাগ। এ লক্ষ্যে চলতি রোপা আমন মৌসুমে কৃষি বিভাগ ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয়ে একযোগে ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের ৩৭টি বøকে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ও পার্চিং ব্যবহার পদ্ধতি শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আলোক ফাঁদ পেতে পোকা দমনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার প্রদর্শনী কৃষি জমির পাশে চার্জ অথবা বৈদ্যুতিক লাইট দুই থেকে তিন ফুট উঁচুতে তিনটি খুঁটির সঙ্গে লাগিয়ে সেই লাইটের নিচে সাবান বা ডিটারজেন মিশ্রিত পানি গামলায় রেখে পোকা দমনের ফাঁদ সৃষ্টি করা হয়। আলো দেখে ধানের জমি থেকে ছুটে আসা মাজরা পোকা, গান্ধী পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, জাব পোকা পানিতে পড়ে মারা যায়। আলোক ফাঁদে আটকে পড়া আমন ফসলের এসব ক্ষতিকারক পোকা কৃষকরা চিহ্নিত করেন। আলোক ফাঁদ ঘিরে সমবেত হয়েছিলেন স্থানীয় শতাধিক কৃষক।
আলোর ফাঁদ দেখতে আসা কৃষক সর্চাপুর গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন থেকে ফসলের জমিতে কীটনাশক দেওয়ার আগে দেখব জমিতে ক্ষতিকর পোকা আছে কি না।
নড়াইল গ্রামের অপর আরেক কৃষক মো. আবুল কালাম বলেন, পার্চিং পদ্ধতিতে পোকা দমনে এটি কম খরচে সহজ বিষয়। এখন কীটনাশকের বিপরীতে এগুলোই ব্যবহার করবো।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমি। এবার রোপা আমন মৌসুমে ব্রি-ধান-৫১, ৫২, ৪৯ জাতের ও বিনা ধান-৭ সহ দেশীয় জাতের তুলশীমালা কালোজিরা ধান আবাদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে সবচে বেশী আবাদ হয়েছে ব্রি-ধান- ৪৯। আবাদের তুলনায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন কর্মকতাগণ।
পার্চিং ও আলোক ফাঁদ কার্যক্রম সম্পর্কে হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সচেতনতার অভাবে অনেক কৃষক জমিতে ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করার আগেই কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকেন। এতে করে ফসলের জমির উপকারী অনেক পোকা মারা যায়। কৃষকও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। পার্চিং পদ্ধতি আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নির্ণয়ের পর কীটনাশক প্রয়োগ করতে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন