২৯ অক্টোবর, ২০২০ ১৭:৫২

রাতে বিজিবি সেজে গরু ডাকাতি, দিনে কসাই হয়ে মাংস বিক্রি!

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

রাতে বিজিবি সেজে গরু ডাকাতি, দিনে কসাই হয়ে মাংস বিক্রি!

কুমিল্লায় বিজিবির পোশাক পরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রাতে গরু ডাকাতির পর দিনে তাদের আরেকটি গ্রুপ কসাই সেজে সেই গরুর মাংস বিক্রি করতো। এই চক্রের তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সম্প্রতি কুমিল্লা সদর উপজেলার ঘিলাতলীতে চৌধুরী ডেইরি ফার্ম থেকে ১২টি গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সৈয়দ মো. নুরুল ইসলাম।

ডেইরি ফার্ম ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২২ অক্টোবর মধ্যরাতে বিজিবির পরিচয়ে ছয়জনের একটি দল গরুর খাদ্য তল্লাশির নামে ওই ফার্মে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে চারজনের পরনে বিজিবির পোশাক ছিল। তাদের একজনের হতে আগ্নেয়াস্ত্র ও বাকিদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল।

ডাকাত দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নৈশপ্রহরী মহব্বত আলী ও তার স্ত্রী সন্তানদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর খামার থেকে ১২টি দেশি-বিদেশি গাভী ও চারটি বাছুর ডাকাতি করে। এগুলোর মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী গরুর মালিক।

এ ব্যাপারে চৌধুরীর ফার্মের মালিক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম চৌধুরী কোতোয়ালী মডেল থানায় ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, বুধবার ডাকাতির মূল হোতা কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার চুলাশ গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলীকে (৪০) আটক করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে।

পরে এই চক্রের আরো দুই সদস্য কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার রুপা মিয়ার ছেলে মো. সহিদ মিয়া (৩৫) ও তার ভাই মাসুম মিয়াকে (৩৮) আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে গরু বিক্রির দুই লাখ ৯৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তারা নগরীর রাজগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজারে ডাকাতির গরুর মাংস বিক্রি করতো।

পুলিশ সুপার জানান, আটককৃতরা কুমিল্লাসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি-ডাকাতি করে নিয়া আসা গরুগুলো সহিদ ও মাসুম মিয়ার কাছে দিলে তারা জবাই করে মাংস হিসেবে বিক্রি করতো। এছাড়া অন্যত্রও বিক্রি করে দিতো। এই পুরো সিন্ডিকেটের সাথে ৪০-৪৫ জন জড়িত রয়েছে। পুরো চক্রটি আটকের জন্য কুমিল্লা জেলা পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  (অর্থ ও  প্রশাসন) আজিম উল-আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমন, কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল হকসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।     

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর