গাজীপুরে নুহাশপল্লীতে নানা আয়োজনে পালিত হলো নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭২তম জন্মদিন। মোমবাতি প্রজ্বলন, কবর জিয়ারত, সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে লেখককে স্মরণ করল তার পরিবার, স্বজন, নুহাশপল্লীর স্টাফ ও ভক্ত পাঠকরা। হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্ন পূরণ করার পাশাপাশি লেখককে নতুন প্রজন্ম সাগ্রহে পাঠ করছে এটা এক নতুন উপলব্ধি বলে জানায় তার পরিবার।
নুহাশপল্লীর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, বরাবরের মতো নানা আনুষ্ঠানিকতায় এবারও লেখককে স্মরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ১ হাজার ১টি মোমবাতি প্রজ্বলন পরো নুহাশ পল্লীকে আলোকিত করা হয়। সকালে লেখকের পরিবার, নুহাশপল্লীর স্টাফ, ভক্ত পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। তার আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। পরে লেখকের ম্যুরালের সামনে জন্মদিনের কেক কাটা হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিল লেখকের কনিষ্ঠ দুই পুত্র নিষাদ ও নিনিত। এসব কর্মসূচিতে হুমায়ূন আহমেদের ভক্তবৃন্দ এবং নূহাশ পল্লীর কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
হুমায়ূন ভক্ত পাঠকরা ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় আজীবন লেখককে স্মরণ করে যাবেন বলে জানান। শুক্রবার সকালে থেকেই হুমায়ূন আহমদের ভক্ত ও হিমু পরিবহণের সদস্যদের নুহাশ পল্লীতে আসতে দেখা গেছে। তারা হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ঘুরে ঘুরে নুহাশ পল্লী দেখেন। শুক্রবার থাকায় মানুষের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো।
লেখকের স্বপ্ন ধীরে ধীরে পূরণ হচ্ছে জানিয়ে লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে এই পেন্ডামিককালে হুমায়ূন আহমেদের লেখা পাঠ করছেন এবং তার লেখার ভেতরকার রস, বোধ ও মানবিকতার সাথে পরিচিত হচ্ছেন এটা বিস্ময়কর। তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের শুরুর দিকের ৮০ দশকের উপন্যাস ২০২০ সালে এসে তারা পড়েও হুমায়ূন আহমেদকে ভালবাসছে, মূল বক্তব্যটা বুঝতে পারছে-এটা আমার কাছে অনেক আশ্চর্যের ব্যাপার। এ আশ্চর্যটা মধুর আশ্চর্য। এটা আমার কাছে খুব আনন্দের একটা ব্যাপার-যে এখনকার প্রজন্ম হুমায়ূন আহমেদকে নতুন করে পড়ছেন। পড়া যারা মাত্র শুরু করেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, স্বপ্নটা অনেক বড় ব্যাপার। স্বপ্নপূরণ এক দিনে বা এক বছরে হয় না, ধাপে ধাপে হয়। স্বপ্নপূরণ একটু একটু করে হচ্ছে। হবে স্বপ্নপূরণ। নেত্রকোনায় হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি উনার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল। গত বছর সেই স্কুলটি ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়েছে। স্কুলটা খুব ভাল চলছে। উনি যখন নিজে স্কুলটা চালাতেন তখন খুব চেষ্টা করেছেন। এটা উনার স্বপ্নপূরণের একটা ধাপ আমরা অতিক্রম করেছি।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন