বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোপালনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে টানা এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনার মামলার প্রধান আসামি মাসুদ রানা (৩৬) ও তার সহযোগি স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবু (৪৫) এখনও রয়েছে অধরা।
আলোচিত এই ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলো ধর্ষক মাসুদের আত্মীয় ধুনট উপজেলার গোপালগর ইউনিয়নের দেউড়িয়া গ্রামের মৃত ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে আ. মান্নান (৪০) ও একই গ্রামের রিপন মিয়ার স্ত্রী সাথী খাতুন (৩৬)। শুক্রবার ভোরে ধুনট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকার হেমায়েত পুর এলাকা থেকে তাদেকে গ্রেফতার করে।
এদিকে ধর্ষণ মামলার আসামীদের সহযোগিতা করার অভিযোগে ও বাদীর সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করার অভিযোগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই আহসানুল হককে গত বুধবার পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ধুনট উপজেলার দেউড়িয়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা (৩৬) একই গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে গত ১৬ জুলাই রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সিএনজিযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এরপর ওই মেয়েটিকে এক মাসেরও বেশি সময় ঘরে আটকে রেখে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে মাসুদ রানা। তার এ কাজে সহযোগিতা করেছেন গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফজলুল হক বাবুসহ কয়েক সহযোগী।
এ ঘটনায় গত ১২ আগস্ট ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক মাসুদ রানা ও গোপালনগর ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবুসহ ৭ জনকে আসামি করে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে এখনও মামলার প্রধান আসামি ধর্ষক মাসুদ রানা ও সহযোগি ইউপি সদস্য ফললুল হক বাবুসহ অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে।
এদিকে ধর্ষক মামলা দায়ের করার পর থেকেই স্থানীয় মাতব্বররা ধর্ষিতার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রেখেছে। এ বিষয়ে ধর্ষিতার মা বলেন, আমার মেয়ে এখনও সুস্থ হয়নি। মানসিক চিন্তায় রয়েছে। আমাদের কোন টাকা পয়সা নেই। তাই স্থানীয় মাতব্বররা আমাকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন হুমকিসহ আমাদের পরিবারকে সামাজচ্যুত করে রেখেছে।
এ বিষয়ে গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার বলেন, ওই পরিবারকে সমাজচ্যুত করার বিষয়টি জানা নেই। তবে তাদেরকে সমাজচ্যুত করা হয় তাহলে স্থানীয় মাতব্বরদের সঙ্গে বসে সমাধান করে দেওয়া হবে।
বগুড়ার ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া মামলার প্রধান আসামিসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে ওই সমাজচ্যুত করা কলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন