ফাল্গুন শুরুর পর থেকে দিনাজপুরের সর্বত্রই গাছে গাছে উঁকি দিয়েছে বিভিন্ন জাতের আমের মুকুল। বাগানগুলোতে এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। কোন কোন গাছে আমের গুটিও ধরেছে। এখন বাগানে বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
কেউ কেউ উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষনাবেক্ষনের নানান পদক্ষেপ নিচ্ছেন। আমের ভাল দাম ও ফলন পাওয়ার জন্য। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে যেমন উৎপাদন বাড়বে, তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রপ্তানিসহ বাজারজাত করতে পারলে কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হবেন এমনটাই বলছেন কৃষি অফিস কর্মকর্তারা।
এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আমের উৎপাদন ভাল হবে বলে আশা করছেন বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা। আবার অনেক ব্যবসায়ীরা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানীর চিন্তা ভাবনা করছেন এবং সেই লক্ষে ভাল ফলন পেতে এবং সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নবাবগঞ্জ, কাহারোল ছাড়াও দিনাজপুরের সকল উপজেলায় আম চাষ হচ্ছে। হিমসাগর, হাড়িভাঙ্গা, রুপালী, বারি-৪, গৌরমতি, গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ হচ্ছে দিনাজপুরে।
এবার মানসম্মত ফলনে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে নবাবগঞ্জের আম ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা। বাগানে চলছে আমের মুকুল আটকে রাখতে পরিচর্যাসহ ঔষধ স্প্রেকরণ। নবাবগঞ্জে কৃষকেরা কৃষি জমিতে সাথি ফসল হিসেবে চাষ করছেন আম।
স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে আম রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনাজপুরের আম বিক্রি হয়। নিরাপদ ও মানসম্মত আম উৎপাদন করে বাজারজাতকরণে নবাবগঞ্জে শতাধিক আমচাষীর সমন্বয়ে ২০১৬ সালে ‘মাহমুদপুর ফল সমবায় সমিতি লিমিটেড’ গঠিত হয়েছে। ঋন সুবিধাসহ সরকারের পৃষ্টপোষকতা পেলে এ অঞ্চলের আম বিদেশে রপ্তানী করা যেতে পারে বলে জানান মাহমুদপুর ফল সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান।
মাহমুদপুর ফল সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান জানান, 'আমার নিজেরই ১৭ বিঘা জমিতে আম চাষ করছি। ভাল ফলনের আশাও করছি। সব আম বাগানে এসেছে সম্ভাবনাময় মুকুল। নিরাপদ, মানসম্মত ফল উৎপাদনে পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, 'নবাবগঞ্জেই ৮০৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এখানে প্রচুর পরিমাণে হিমসাগর, হাড়িভাঙ্গা, রুপালী, বারি-৪ জাতের আমই চাষ হয়। এ উপজেলায় প্রতিবছর প্রায় ৮কোটি টাকার আম বিক্রি হয়। এ অঞ্চলের আম মান-সম্মতভাবে উৎপাদন করে বিদেশে যেন পাঠানো সম্ভব হয় এই লক্ষে প্রশাসনের সহায়তাসহ সার্বিক কামনা করেন।'
উল্লেখ্য, বিভিন্ন বাগানে আম চাষ হচ্ছে তাই নয়। এছাড়াও কিছু কিছু বাড়ির উঠানে কিংবা প্রতিষ্ঠানের সামনেও আম গাছে মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। জেলায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে এবং উৎপাদন হতে পারে প্রায় এক লাখ টন আম।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির