আম-মুড়ি বিশেষ করে ভোজনপ্রিয়দের কাছে চিরচেনা খাবারের এই আয়োজনটা বেশ পরিচিত ও মুখরোচক। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস মূলত মধুমাস হিসেবেই আমাদের কাছে পরিচিত। আর এই সময়ে সবার ঘরে আমের রস, চিড়া-মুড়ি, দই-গুড়, নারিকেল দিয়ে মেখে খাওয়ার একটা রীতি সেই যুগযুগান্তর ধরে চলে আসছে। আমের রস আর মুড়ি তো অনেকের কাছে অমৃত। তবে এক সময় তা পরিবার, স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে একসঙ্গে মজা করে খাওয়ার আয়োজন ছিল ভিন্নরকম। এখন আর যা দেখা যায় না। অনেক দিন পর এমন একটি উৎসবের আয়োজনের দেখা মিলল নাটোরের লালপুরে।
করোনাকালে উন্মুক্ত মাঠে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চেয়ার নিয়ে বসে পড়েছেন পুলিশ সদস্য, তাদের পরিবার, আসামি ও দর্শনার্থীরা। সবার হাতে থালা ভর্তি ক্ষীরশাপাত আম ও মুড়ি। আম চিপে মুড়ি ভিজিয়ে হাপুসহুপুস করে খাওয়া শুরু করলেন একসঙ্গে। যার যতটুকু দরকার, তিনি ততটুকু করে চেটেপুটে খেলেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে এই দৃশ্য চোখে পড়ে নাটোরের লালপুর থানা চত্বরে। থানা কর্তৃপক্ষ জানান, এটি একটা উৎসব। স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে খোলা জায়গায় এই আয়োজন করা হয়। উৎসবে অংশগ্রহণ ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। উৎসবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) থেকে শুরু করে কনস্টেবল ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন। এমনকি থানাহাজতে থাকা আসামি ও দর্শনার্থীরাও আম-মুড়িতে অংশ নেন।
ক্ষীরশাপাতি আম ও মুড়ি রাখা ছিল এক জায়গায়। যার যতটুকু ইচ্ছা, তিনি ততটুকু নিয়ে খেয়েছেন। খেতে খেতে অনেকে গল্পে মেতে উঠেন।
লালপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজলুর রহমান বলেন, পুলিশকে সারাক্ষণ কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবসময় আনন্দ উৎসবে মিলিত হয়ে ওঠে না। বিশেষ করে করোনাকালে তারা যেন রোবট হয়ে গেছেন। এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য তারা আম-মুড়ি উৎসবের আয়োজন করেন।
লালপুর থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, ইচ্ছা থাকলেও সময়ের অভাবে আমরা মা-বাবার কাছে বসে আম-মুড়ি খেতে পারি না। অথচ আমের এখন ভরা মৌসুম। তাই সবাই মিলে আম-মুড়ি খাওয়ার মধ্য দিয়ে পারিবারিক আনন্দ উপভোগ করেছি। এখন থেকে প্রতিবছর লালপুর থানায় আম-মুড়ি উৎসব হবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ