নামেই শুধু মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। কিন্তু বাস্তবে ১০০ শয্যার হাসপাতাল চালনোর জন্যই রয়েছে লোকবল সংকট। এই স্বল্প সংখ্যক লোকবল দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হাসপাতালটি। কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি থাকলেও লোকের অভাবে সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। দুটি সুবিশাল ভবন থাকলেও একটিতে নেই জেনারেটর। জনবল সংকট ছাড়াও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র টেকনিশিয়ানের অভাবে সিটিস্ক্যান, এমআরআই ও ডিজিটাল এক্সরে মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম থাকার পড়েও কোনো কাজে আসছে না। বাধ্য হয়ে অধিক টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, অনেকের ক্লিনিকের ব্যবসা রয়েছে। এসব মেশিন নষ্ট রয়েছে বলে দালালরা রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে যায় ক্লিনিকে।
১০০ শয্যার হাসপতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও শুধু নার্স নিয়োগ দেওয়া ছাড়া বাড়ানো হয়নি অন্যান্য জনবল। সরকার পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করলেও ইনডোর ও আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশিরভাগ ওষুদ বাইর থেকেই কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও দালালের দৌরাত্ম্যে প্রতারিত হচ্ছেন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অনেক রোগী। ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োগকৃত দালালরা এই দুর্ভোগকে পুঁজি করে প্রতারিত করছে রোগীদের।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, ১০০ শয্যা হাসপাতালের লোকবলই সংকট রয়েছে, তার ওপর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল চালানো কঠিন। কোটি কোট টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও কোনো কাজে আসছে না শুধু টেকনিশিয়ানের অভাবে। তাছাড়া কিছু ভারী যন্ত্রপাতি ঠিকাদার এখনো হস্তান্তর করেনি। দালালমুক্ত করতে হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ লাগবে।
তিনি আরোও বলেন, আইসিইউ, গ্যস ও আইসোলেশন ইউনিটের সমস্যা নেই। তবে দুইটি বড় ভবন থাকলেও একটিতে নেই জেনারেটর। বিদ্যুতের মাত্র একটি লাইন নষ্ট হলে হাসপাতাল অন্ধকার। আরেকটি বিকল্প লাইন প্রয়োজন। শুধু লোকবলের অভাবে কাঙ্খিত সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
অন্যদিকে, নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি চালু হয়নি। এখনো অনেক কাজ বাকি। এর মধ্যে মাত্র কয়েকজন ডাক্তার বহির্বিভাগে রোগী দেখেন। ফলে রোগীরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবাসিক চিকিৎসা সেবা শুরু হলে সদর হাসপাতালের চাপ কমে যেত বলে জানান রোগীরা।
কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. গৌতম রায় জানান, এ বছর ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে হস্তান্তরের কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালটি হস্তান্তর করা হয়নি। সময় বাড়ানো হয়েছে। তারপরেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা বহির্বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যাচ্ছি। আসা করছি খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই