সংস্কারের দুই বছরের মধ্য চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বরগুনার বামনা উপজেলার ১৫টি সড়ক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির আওতাভুক্ত সড়কগুলোতে অনুমতি ছাড়াই ভারি যানবাহনের অবাধ চলাচলের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
নিষিদ্ধ টমটম, নসিমন, ভারি লরীসহ এসব যানবাহন চলাচল বন্ধে ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল, বরগুনা জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে এলাকাবাসী লিখিত আবেদন করেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বামনা উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের তথ্যমতে, এলজিইডির আওতায় ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৫টি সড়ক সংস্কার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও যানবাহন চালকরা জানান, সড়কগুলো সংস্কারের পর থেকেই ছয়চাকার মাহেন্দ্র, ট্রাক্টর, লরী, ইটভাটার জন্য মাটি, পাথর বালিসহ ইটভাটার মালামাল বহন করে সড়ক দিয়ে চলাচল শুরু করে। যে কারণে, সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, ধুলা জমে থাকায় পথ চলতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব রফিক হাসান এর বাড়ি পাশ থেকে মাটি কেটে বিক্রি করেন বামনা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাব্বির ফেরদৌস তালুকদার ও তার ছেলে ওমি তালুকদার। মাটি কেটে মাটি ভর্তি ট্রাক বামনা উপজেলার সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহীদ ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ির রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এতে রাস্তা ভেঙে বড় গর্ত ও খানাখন্দ হওয়ায় ধুলায় এ পথে চলা দুষ্কর।
রামনা এলাকার কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগে শহীদ ইঞ্জিনিয়ার মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তাটি নির্মাণ করে দেন। এরপর থেকে নিয়মিতই মাটিভর্তি গাড়ি চলাচল করায় বর্তমানে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাব্বির ফেরদৌস তালুকদার বলেন, মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়। এলাকার লোকজন ভেঙে যাওয়া নদী তীরের মাটি বিক্রি করে দেয়। আমি ওই মাটি কিনে ভাটা ও বসত বাড়িতে বিক্রি করি। সড়ক ছাড়া এসব মাটি পরিবহনের তো কোনো ওয়ে নাই। সড়ক তো যানবাহন চলাচলের জন্যই নির্মাণ করা হয়েছে।’
এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা এলজিইডির আওতায় বামনায় ১৫টি সড়ক রয়েছে। প্রভাবশালীদের একটি সিন্ডিকেট আছে যারা ছয় চাকার মাটি বহনকারী গাড়ির মালিক। এরা মাটি লোড দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। তারাই রাস্তাগুলো নষ্ট করে ফেলছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা আইন-শৃংখলা সভায় আলোচনা করব এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পদক্ষেপ নেব।
বামনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিবেক সরকার বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশী লোড নেয়া সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ কিছু যানবাহন আমাদের উপজেলার সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এজন্য একদিকে সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থ নষ্ট হচ্ছে তেমনি এলাকাবাসী এই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে খুব শীঘ্রই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত ৪ জানুয়ারী বামনা থেকে এলাকাবাসীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমি বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিদের্শ দিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল