ক্লাশে অংক করতে না পারায় এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মরিয়ম আক্তারের বিরুদ্ধে। আহত শিক্ষার্থীকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের ধুপতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফা ইসলাম অথৈকে (১১) অংক করতে বলেন। এ সময় অথৈ অংক করতে না পারলে শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে লাইব্রেরী থেকে লাঠি এনে অথৈর মাথা ও পিঠে উপর্যুপরি মারধর করে। এতে অথৈ অসুস্থ হয়ে পড়লে সহপাঠীরা বিষয়টি অথৈর মাকে প্রথমে জানান। খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে অথৈর বাবা মেয়েকে নিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
অথৈর বাবা আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বুধবার ক্লাস শুরুর পর অথৈকে অংক করতে দেয় স্কুল শিক্ষক মরিয়ম। আমার মেয়ে অংক করতে দেরি হওয়ায় তিনি অপর এক শিক্ষার্থীকে একই অংক করতে দিলে সেই শিক্ষার্থী অংক করে। এসময় শিক্ষক মরিয়ম অথৈকে গালমন্দ করতে থাকেন। অথৈ অংক করতে না পারায় শিক্ষক লাইব্রেরী থেকে লাঠি এনে অথৈর মাথা ও পিঠে পিটায়। আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে সহপাঠীরা অথৈর মাকে জানান। অথৈর মায়ের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি স্কুলে গিয়ে অথৈকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাই।
শিক্ষার্থীর মা লিমা আক্তার বলেন, আমার মেয়ে প্রত্যেক ক্লাসে ফার্স্ট হয়। মেয়েকে মারধর করার বিষয়টি আমি জানতে চাইলে আমার সাথেও খারাপ আচরণ করেছে শিক্ষক মরিয়ম। তিনি আমার মেয়েকে পিটিয়ে অসুস্থ করে দিয়েছেন। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছি।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় ভুষণ মিস্ত্রি বলেন, শিক্ষার্থীর পরিবার আমার কাছে আসার পরে আমি ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে বসেছি। শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মরিয়ম বলেন, মারধরের বিষয়টি সত্য নয়। আমি ওদের গণিত শিক্ষক। গণিত শেখাতে গিয়ে আমি অথৈকে সামান্য কটূ কথা বলেছি। সে কিভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে গেল তা আমার জানা নেই। হাসপাতালে ভর্তি করানোর খবর শুনে আমি অথৈকে দেখে এসেছি। ওর মাথায় ব্যথা, এটা নাকি আগেই ছিল।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখব। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল