কক্সবাজারের চকরিয়ার আলোচিত দুই বোনকে ঘুমের বড়ি খাইয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি আবু হাসান মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েলকে (২৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫’র একটি দল। মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার ভবানীপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সহকারি পুলিশ সুপার মো.বিল্লাল উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃত আবু হাসান মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েল (২৬) চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের জয়নাল আবেদিনের ছেলে।
র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মো.বিল্লাল উদ্দিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, ২০২১ সালের ২২ জুন রাতে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা তাদের মেয়েকে একা বাড়িতে রেখে এক আত্মীয়র বাসায় বেড়াতে যান। ওই রাতে ভিকটিম বাড়িতে একা হওয়ায় তার চাচাতো বোনকে বাসায় এনে রাখে। ওইদিন রাতে বাড়িতে আর কেউ না থাকার এ সুযোগে আবু হাসান মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েল বাড়িতে ঢুকে দুই বোনকে কৌশলে ঘুমের বড়ি সেবন করায়। এতে তারা অজ্ঞান হয়ে পড়লে দুই বোনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে জুয়েল।
পরদিন ঘটনাটি ভিকটিম তাদের পরিবারকে জানালে তারা বিষয়টি চকরিয়া থানায় অবহিত করেন। পরে চকরিয়া থানা পুলিশ দুই বোনকে ডাক্তারি পরীক্ষা করান। ওই ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পায় পুলিশ। এরপর ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ২৪ জুন চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে ধর্ষণ মামলার আসামি আবু হাসান মোহাম্মদ ইব্রাহিম জুয়েল গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করে এবং পালিয়ে বেড়ায়। ওইসময় ঘটনাটি কক্সবাজারে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
পরে র্যাব-১৫ বিষয়টি জেনে ধর্ষণ মামলা পলাতক আসামি জুয়েলকে গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। র্যাব-১৫ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখতে পায় জুয়েল বারবার স্থান পরিবর্তন করছে। একপর্যায়ে র্যাব নিশ্চিত হয় ওই আসামি গাজীপুরে অবস্থান করছে। পরে ২২ মার্চ রাতে অভিযান চালিয়ে র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক টিক গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার ভবানীপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও জানান এএসপি মো.বিল্লাল উদ্দিন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ধর্ষণ মামলার আসামি জুয়েলের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ চার্জশীটও দিয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে সে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল।
বুধবার সকালে আসামি জুয়েলকে থানায় হস্তান্তরের পর চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ