পাহাড়ি ঢল আর অব্যাহত ভারী বর্ষণে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতি। জেলার কলমাকান্দা উপজেলার সঙ্গে জেলা সদর এবং অন্যান্য উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেসে যাওয়া বাড়ি-ঘরের মানুষ ছুটছেন নেত্রকোনা-ময়মনসিংহের দিকে। সন্তানাদিসহ হেঁটেই পাড়ি দিচ্ছেন বন্ধুর পথ। অন্যদিকে ঢলে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার অতিথপুরের ইসলামপুর এলাকায় ৩৪ নম্বর রেল ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে সকাল থেকে।
এ ছাড়া দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও আটপাড়াসহ মোট ৬টি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে দেখা দিয়েছে, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
কলমাকান্দা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় সবগুলোই এখন পানিতে নিমজ্জিত। বিভিন্ন স্কুলের দোতলায় আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের বাড়িতেই পানির ওপর বসবাস করছেন। এ ছাড়া একবারে সদর ইউনিয়নের বাহাদুরকান্দা, ডুবিয়ারকোনাসহ বেশকিছু এলাকার মানুষ বাড়ি ছেড়ে শিশুদের নিয়ে বৃষ্টিতেই রওয়ানা হয়েছেন আত্মীয় স্বজনদের বাড়ির উদ্দেশে। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন গৃহপালিত পশুও। একই অবস্থা দুর্গাপুর, বারহাট্টা উপজেলারও।
কলমাকান্দা থেকে চলাচলের একমাত্র সড়কটি ১৫ থেকে ২০ টি স্থানে ঢুবে থাকায় মানুষকে কোমড় পানি ও সাঁতরে পার হতে দেখা গেছে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে নানান জায়গায় ভাঙা থাকায় ঢলের পানি স্রোতের গতিতে যাচ্ছে। কোখাও কোথাও মাঝি নৌকা দিয়ে সড়কের একপাশ থেকে অপর পাশে পার করে দিচ্ছন টাকার বিনিময়ে।
এদিকে গরু, ছাগল এগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষ। মেইন সড়কের উঁচু স্থানগুলোতে তাদের গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে মানুষের ও গবাদি পশুরও। অনেকে চিড়া মুড়ি খেয়ে গত দুদিন ধরে রয়েছেন। অন্যদিকে গরুর খাদ্য জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে বানভাসীদের। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ