পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাঙন আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ তাদের বাড়িঘর নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিচ্ছেন। তারা বলছেন, বার বার আশ্বাস দিলেও প্রতিবছরই ভাঙছে পদ্মার পাড়। আর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, আম বাগানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। তাই ভাঙনে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতেই তারা তাদের বাড়িঘর আগে-ভাগেই সরিয়ে নিচ্ছেন।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বহমান পদ্মা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তাই পদ্মার ভাঙন থেকে বাঁচতে নিরাপদ স্থানে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন পদ্মা তীরবর্তী গ্রামের মানুষ। গত কয়েকদিন থেকে উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমিসহ একাধিক ভিটামাটিতে ভাঙন ধরেছে। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে কুপপাড়া, মুন্সিপাড়া, ড্যাইসাপাড়া ও ক্যাঠ্যাপাড়াসহ তারাপুর এলাকার মানুষ। এছাড়া সেখানকার শতশত বিঘা আবাদি জমি, স্থাপনাসহ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও হুমকির মুখে রয়েছে। তাই সেখানকার মানুষজন নিজেদের বাড়িঘর সরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাচ্ছেন।
মনোহরপুর কুপপাড়া গ্রামের সোহরাব আলী বলেন, পৈতৃক সম্পত্তিগুলো দিন দিন পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এলাকা ছাড়া তার কোথাও জায়গা জমি নেই। কোথায় যাবেন আর কোথায় থাকবেন, এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। বাধ্য হয়ে তিনি পরের ধানি জমিতে ঘর তুলেছেন।
অন্যদিকে ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে নিজ বাড়ি ভেঙে মুন্সিপাড়ায় ঘর তুলেছেন তবজুল নামে অপর এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এই এলাকায় নদী ভাঙন নতুন কিছু না। এর আগেও কয়েকবার ভাঙন থেকে বাঁচতে পূর্বের ভিটামাটি ছেড়ে এসেছেন তিনি।
মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা শিমুল বলেন, নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী সমাধান না করলে এলাকা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ প্রতিবছর নদী ভাঙনের ফলে এলাকা দিনদিন ছোট হচ্ছে, কমে যাচ্ছে আবাদি জমি। পদ্মায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন হয়। তার মধ্যে প্রায় ২৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। আর প্রায় ১৩ কিলোমিটার জুড়ে বাঁধ নির্মাণ করলে নদী ভাঙন থেকে স্থায়ী সমাধান পাবে পদ্মা পাড়ের মানুষ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, নদী ভাঙন এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। প্রকল্পটি পাশ হলে কাজ শুরু করা হবে। তবে তাৎক্ষণিক ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই