একদিকে ঈদের আমেজ। অন্যদিকে প্রকৃতি সেজেছে নানা রূপে। তাই তো এখনো পর্যটকদের ভিড় রয়েছে পাহাড়ি কন্যা রাঙামাটিতে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের হৈ হৈ আনন্দে-উল্লাসে মেতেছে রাঙামাটির পর্যটন স্পট। প্রতিদিন আসছে ৩ থেকে ৪ হাজার পর্যটক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে যেমন পর্যটন খাতে রাজস্ব আয় বাড়ছে, তেমনি সচল হচ্ছে পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।
জানা গেছে, ঈদুল আজহার পর দিন থেকে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নামছে। শুধু রাঙামাটি নয়, এমন পর্যটক উৎসবে মেতেছে অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। সবুজ অরণ্যে রাজ্য পার্বত্যাঞ্চলে পুরোদমে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। বইছে পর্যটক উৎসবের আমেজ। পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। অগণিত পর্যটক আগমনে তিল পরিমাণ জায়গা খালি নেই কোথাও। এখনো শতভাগ বুকিং রয়েছে শহরের আবাসিক হোটেল, মোটেল, সরকারি রেস্ট হাউসগুলো। কোথাও রুম খালি নেই। আছে অগ্রিম বুকিং।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ছিল লোকে লোকারণ্যে ভরপুর। প্রকৃতির টানে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো পার্ক ও কাপ্তাই-আসামবস্তী সড়কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কাপ্তাই হ্রদ নৌ-ভ্রমণের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছে। আবার কেউ প্রকৃতিকে উজাড় করে দিচ্ছে নিজেকে। বিকালের সূর্যের সোনালী রঙ যখন ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তখনি মানুষের ভিড় জমে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুতে।
রাঙামাটি পর্যটন সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স, ডিসি বাংলো পার্ক, পলওয়ে পার্ক, সুবলং ঝর্ণা, আসামবস্তি সড়ক, প্যাদা টিং টিং, বরগ্যাং ও ফুরামন পাহাড়ের মত অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে রাঙামাটিতে। এসব স্থানে পর্যটকদের জন্য গড়ে তুলে হয়েছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট আর বিনোদন কেন্দ্র। রেস্টুরেন্টগুলোতে মিলছে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বিভিন্ন খাবার। যার প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে সবচেয়ে বেশি।
এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে আছে এ অঞ্চলের মানুষের দেশিও পোশাক ও পণ্য সামগ্রী। যারা ঘুরতে আসছে তারাও ছুটে যাচ্ছে এসব শপিংমলে। ফলে চাঙ্গা হয়ে উঠছে স্থানীয় ক্ষুদ্র পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলো। একই সাথে ব্যস্ত সময় পার করছে কাপ্তাই হ্রদের নৌ-টুরিস্ট বোর্ট ব্যবসায়ীরা। দিন রাত ছুটছে তারা কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ পিপাসুদের নিয়ে।
রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সর ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন হাজার পর্যটক আসছে এখানে। বিশেষ করে ঈদের পর দিন থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়েছে। রাঙামাটি কমপ্লেক্সের পর্যটন মোটেলের সবগুলো রুম ১০০ভাগ বুকিং রয়েছে। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে কয়েকগুণ।
টুরিস্ট বোর্ট মালিক সমিতির ম্যানেজার মো. রমজান আলী জানায়, টুরিস্টরা যাতে কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়াতে পারে তাদের জন্য ১০০টি বোর্ট প্রস্তুত থাকে। ১২০০ থেকে ১৫শ টাকার মধ্যে ঘুরা যায় পুরো কাপ্তাই হ্রদ।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর