জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবরে মধ্যরাতে তেলের পাম্পে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল মোটরসাইকেল ও বাস চালকরা। শনিবার সকালে বগুড়া থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি বেশ কিছু বাস তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বন্ধ রেখেছে। বাস বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।
জানা যায়, শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মোটরসাইকেল চালকরা তেলের পাম্পে গিয়ে ভিড় করে। রাত সাড়ে এগারটার সময় বিভিন্ন তেলের পাম্পে দীর্ঘলাইন দেখা যায়। শহরের আশপাশে তেলের পাম্পগুলোতে শতশত মোটরসাইকেল ভিড় করে। লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেকে তেল না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গিছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা থেকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বগুড়ার শহরের মাটিডালি, ২য় বাইপাস, সাবগ্রাম, বনানী, শাকপালা মোড়, মেডিকেল, সিলিমপুর, বেতগাড়ী এলাকার পাম্পগুলোতে রাত এগারোটা বাজতেই ভিড় শুরু হয়ে যায় মোটরসাইকেল চালকদের। প্রতিটি মোটরসাইকেল চালকই তাদের সাধ্যমত তেল বাইকের টাংকিতে ভরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
বগুড়ার সিলিমপুর এলাকার বগুড়া ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেল চালক রুবেল হোসেন জানান, হঠাৎ করে রাতের মধ্যে এমন প্রজ্ঞাপন জারি করে বিপাকে ফেলা হয়েছে মোটরসাইকেল চালকদের। কারণ মোটরসাইকেল চালকরাই সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল পেট্রোল ও অকটেন ব্যবহার করে থাকে। বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকই সমাজের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। মোটরসাইকেল চালিয়ে সাশ্রয় ভাবে যাতায়াত করা হয়। কিন্তু হঠাৎ লিটার প্রতি ৫০ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়তে হলো।
মুকুল ইসলাম, রাজা মিয়াসহ আরো বেশ কয়েকজন জানান, রাতে বাড়ি ফেরার পথে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পাওয়া যায়। রাত ১২টা থেকে ৮৬ টাকা লিটারের পেট্রোল বিক্রি হবে ১৩০ টাকা দরে। তাই ছুটে এসেছি তেল নিতে। ৫০০ টাকার তেল নিয়ে বাড়ি ফিরতে চাই। কিন্তু যে পরিমাণ ভিড় ছিল তাতে তেল সংগ্রহ করা যায়নি।
বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকার মোটরসাইকেল চালকরা জানান, এবার সকল পণ্যের দাম বাড়বে। পরিবহন সেক্টরের ভাড়া বেড়ে যাবে। ভাড়া বেড়ে গেলে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম বাড়বে। দাম বাড়ার সাথে সাথে বিপাকে পড়ে যাবেন নিম্নবিত্ত পরিবার।
এদিকে, বগুড়ায় পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দুরপাল্লা ও আভ্যন্তরিন রুটে তেলচালিত বেশিরভাগ বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই এই অঘোষিত ধর্মঘট শুরু হয়।
বগুড়ার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রংপুর, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, নগরবাড়ীসহ রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস বগুড়া ছেড়ে যায়নি। তবে সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ ও জেলার আভ্যন্তরীন রুটে গ্যাসে চালিত বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।
প
রিবহন শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের দাবি, জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকসানের মুখে তারা যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন। নতুন করে ভাড়া নির্ধারণ না করা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সভাপতি শাহ মোঃ আখতারুজ্জামান ডিউক জানান, মালিক পক্ষ থেকে কোন ধর্মঘট ডাকা হয়নি। যারা তেলে গাড়ী চালায় তারা বন্ধ রেখেছে। তারা নিজ দায়িত্ব থেকে বাস বন্ধ রেখেছে।
জানা যায়, শুক্রবার রাত দশটায় জ্বালানিয় খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ভোক্তা পর্যায়ে লিটার প্রতি ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
বিডি প্রতিদিন/এএ