ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের গরঙ্গা গ্রামের রতন সরকারকে (৪৫) মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে মারধর করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন পলাশের উপস্থিতিতে তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী যুবক রতন বলেন, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মঈনুদ্দিন পলাশের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন লোক তার বাড়িতে যায়। গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। মারধরের এক পর্যায়ে জোপূর্বক খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করবি না শাসিয়ে হুমকি দেন ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে থাকা জাহাঙ্গীর ফকির, পরিমল চন্দ্র শীল, খোকন মল্লিক, পংকজ কুমার শীল, অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নজরুল ইসলাম ও মোবাশ্বেরসহ আরো ৫ থেকে ৭ জন লোক।
ইউপি চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন পলাশ চলে যাওয়ার পরে জাহাঙ্গীর ফকির, পরিমল চন্দ্র শীল, খোকন মল্লিক, পংকজ কুমার শীল, নজরুল ইসলাম ও মোবাশ্বেরসহ আরো ৫ থেকে ৭ জন এসে রতনের ঘরের ভিতরে থাকা জমির দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসিয়ে দেওয়া ও খুন জখমের হুমকি দেয় ।
এ ঘটনার আধা ঘন্টা পূর্বে মঈনুদ্দিন পলাশ জোর করে একটি কাগজে রতন সরকারের স্বাক্ষর নিতে চান। স্বাক্ষর না দিলে ইউপি চেয়ারম্যান অকথ্য ভাষায় রতনকে গালি দেন। চেয়ারম্যানের সাথে থাকা লোকজন রতনকে মারধর করে। এ ঘটনায় রতন ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে রতন সরকার বলেন, আমাকে মারধর করে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে জোরপূর্বর স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। রতন আরো বলেন, ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া দুই একর ৮৩ শতাংশ জমি ২০২১ সালের ৩ মার্চ বিক্রি করার পর থেকে আমাদের ওপরে ক্ষিপ্ত ছিল জাহাঙ্গীর ফকির, পরিমল চন্দ্র শীল, খোকন মল্লিক, পংকজ কুমার শীল, নজরুল ইসলাম ও মোবাশ্বের।
এ ব্যাপারে বিনয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন পলাশ বলেন, রতন মুল ওয়ারিশকে বাদ দিয়ে ভুয়া ওয়ারিশ তৈরী করে ইতোপূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মিথ্যা ওয়ারিশ সনদ নেয়। সুভাষিনীর ওয়ারিশ আদালতে ওই ওয়ারিশ পত্র বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত সদর থানা থানার ওসিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
থানা থেকে তার কাছে ওয়ারিশী সদন তদন্তভার দেওয়া হলে তিনি সেখানে গিয়ে তদন্তকালে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রতনকে তার বাবা ও চাচাদের নাম জানতে চাইলে সে চুপ থাকায় স্থানীয় একজন তাকে ধাক্কা দেয়। এর বেশী কিছু না। তখন একটি সাদা কাগজে বাদী বিবাদীসহ সকল উপস্থিত লোকদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, আমি এ ধরনের একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি । তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ