গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চাঁদাবাজি ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে অটোরিকশা চালকরা। শনিবার সকালে অটোরিকশা চালানো বন্ধ রেখে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে চালকরা।
এলাকাবাসী ও প্রতিবাদ সমাবেশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা-সিনাবহ আঞ্চলিক সড়কে প্রায় দুই শতাধিক অটোরিকশা চলাচল করে। অল্প কিছু অটোরিকশা মালিকানাধিন থাকলেও বেশির ভাগই ভাড়া নিয়ে চালান চালকরা। যারা অটোরিকশা চালান, তারা সবাই গরীব অসহায়। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার প্রতিবন্ধীও। জীবনযুদ্ধে কোনো রকম বেঁচে থাকার জন্য হাতে তুলে নিয়েছেন অটোরিকশার হ্যান্ডেল। সেখানেও নজর পড়েছে চাঁদাবাজদের। অটোরিকশা মহাসড়কে না উঠালেও পুলিশ ও সমিতির নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করেন সোহেল রানা, আব্দুল আলীম, বাবুল হোসেনসহ কয়েকজন চাঁদাবাজ। প্রতি অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে এবং পুলিশের কথা বলে মাসে আরো ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। ওই চাঁদাবাজদের সঙ্গে পুলিশের একটা যোগসাজসও রয়েছে বলে অভিযোগ।
চাঁদাবাজদের কথামতো আঞ্চলিক সড়কের মাথায় কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে থেকে অটোরিকশা তুলে নিয়ে মামলা দেয় পুলিশ। আর একেকটি মামলা ভাঙাতে ২ হাজার ৬৫০ টাকা লাগে। এভাবে একেকটি অটোরিকশাকে যদি মাসে দুটি মামলা দেয় সংসার চালানো ঝুঁকিতে পড়েন গরীব অসহায় চালকরা। ওই চাঁদাবাজি ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবিতে শনিবার সকালে অটোরিকশা বন্ধ রেখে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন গরীব অসহায় অটোরিকশা চালকরা।
এসময় তারা উপজেলার কালামপুর দোকানপাড় এলাকায় সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কালিয়াকৈর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, ওই ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি শাহ আলম, ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নাজমুল নাহার, ওই ওয়ার্ড মহল্লা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, অটোরিকশা চালক সাইদুর রহমান, আসিফ হোসেন, রাকিব হোসেনসহ আরো অনেকে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রতিবন্ধী অটোরিকশা চালক ওমর ফারুক, সুলতান প্রামানিক, উজ্জল হোসেনসহ বেশকিছু চালক জানান, চাঁদা না দিলে চাঁদাবাজরা আমাদের মারধরসহ নানা ধরণের হুমকি দিয়ে থাকেন। এমন কি তাদের কথামতো আমাদের অটোরিকশা তুলে নিয়ে মামলা দেয় হাইওয়ে পুলিশ। আমরা চাঁদা দিতে পারবো না। স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা স্বাধীন ভাবে চলতে চাই।
অভিযুক্ত ওই ওয়ার্ড কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, অটোরিকশাগুলো থেকে আমি কোনো টাকা পয়সা তুলি না। যারা টাকা পয়সা তোলেন, তাদের সাথে কথা বলেন। এছাড়া অপর অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, আমরা মহাসড়কের বাইরে থেকে অটোরিকশা ধরে মামলা দেইনা। আর হাইওয়ে পুলিশের নামে কোনো টাকা-পয়সা নেওয়া হয় না। আমাদের কথা বলে কেউ কারো কাছে টাকা চাইলে নিষেধ করে দিবেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল