২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ২৩:২৪

গণধর্ষণের শিকার সেই কিশোরী আর বেঁচে নেই

নরসিংদী প্রতিনিধি

গণধর্ষণের শিকার সেই কিশোরী আর বেঁচে নেই

নরসিংদীতে গণধর্ষণের শিকার সেই কিশোরী চিকিৎসার অভাবে ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে অবশেষে মারা গেছে। শনিবার বেলা ১১টায় শহরের সাটিরপাড়া ইউএমসি এলাকায় ভাড়া বাসায় তার মৃত্যু হয়। তার পরিবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

স্বজনরা জানান, দুই বছর আগে ধর্ষণের ঘটনার পর আসামি রফিককে (৫০) এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপদ করে। অপর আসামি ফয়সাল ও ফারুক বিভিন্নভাবে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। শুধু তাই নয়, ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের জন্যও নানাবিধ ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এই ঘটনার পর থেকে ওই কিশোরী তার কর্মস্থলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে সে মাসকিভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ধর্ষণের ঘটনার পর একদিকে ঘরবন্দী অপরদিকে বাবা প্রতিবন্ধী হওয়ায় অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হন। ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিশোরী।  

ঘটনার মামলার বিবরণে জানা যায়, ওই কিশোরী তার বাবা মায়ের সাথে শহরের সাটিরপাড়া ইউএমসি এলাকার শফি হাজীর বাড়িতে বসবাস করতো। তার ওপর চোখ পড়ে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া রফিক মিয়ার। রফিক মিয়া তাকে প্রায়ই অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। কিন্তু এতে সাড়া দেয়নি সে। ফলে তাকে ভোগ করার পরিকল্পনা করে রফিক। 

ঘটনার দিন ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর। রাত প্রায় ১০টা। কিশোরী নিজ ঘরে বাবা মায়ের সাথে রাতের খাবার শেষে বাড়িওয়ালার ঘরে যাওয়া যাচ্ছিল। তখন পথে ডেকে নিজ ঘরে নিয়ে যায় রফিক। মোবাইলে ফয়সাল ও ফারুককে ডেকে নিয়ে আসে রফিক।

কিশোরী ঘরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই রফিক ধর্ষণ করেন। আর ফয়সাল ও ফারুক মোবাইল দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও ধারণ করেন। পরে ফয়সাল ও ফারুক পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এভাবে বেজে যায় ভোর ৪টা। ঘটনার বিষয়টি কাউকে জানালে বা মামলা করলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ঘর থেকে কিশোরীকে বের করে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় কাউকে কিছু না বলেই দিন অতিবাহিত করতে থাকে কিশোরী। 

ঘটনার দু-একদিন যেতে না যেতেই আসামিরা পুনরায় তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতেই বিষয়টি পরিবারকে জানায় কিশোররী। আর এ ঘটনার ৭দিন পর ১৪ অক্টোবর নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নরসিংদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে সে। মামলা করার পর পুলিশ প্রধান আসামি রফিক, সহযোগী ফয়সাল ও ফারুককে গ্রেফতার করে। রফিক প্রায় দেড় বছর এবং ফয়সাল ও ফারুক কিছুদিন জেলখাটার পর জামিনে মুক্তি লাভ করেন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর