দেশ জুড়ে বিখ্যাত বাউল সাধক উকিল মুন্সীর গান মানুষের মুখে মুখে থাকলেও তার বংশধরদের তেমন চেনেন না কেউ। এক সময় পরিবারের সবাই মিলে বাউল গান করলেও এখন নানা সমস্যায় দিনাতিপাত করে যাচ্ছে পুত্রবধূ, নাতি-নাতনিরা। সমাজসেবার দেয়া বয়স্ক ভাতাটি বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় দুই বছর ধরে। অথচ উকিল মুন্সীর স্মৃতিরক্ষায় চলছে কোটি কোটি টাকার স্থাপনা তৈরির কাজ।
এদিকে সমাজসেবা কর্মকর্তারা বলছেন, অসুস্থতার কারণে যোগাযোগ করতে না পারা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সেই তথ্য দেয় নাই ফলে এমনটা হয়েছে। এদিকে এমন খবর শুনে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ চিকিৎসা সহায়তার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেতাই নদীর পাড়ে মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের জৈনপুর গ্রামটিতে থাকতেন বাউল সাধক উকিল মুন্সী। একটি মসজিদে ইমামতি করতেন আর গান করতেন। পরবর্তীতে ছেলে আব্দুস ছাত্তার ও তার স্ত্রী সন্তানেরাও এই বাউল গানের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ফলে তাদের আর পড়াশোনা এবং অন্য কোনো কিছুর প্রতি আগ্রহ হয়নি। কিন্তু বর্তমানে উকিল মুন্সীর পুত্রবধূ ফুল বানু বয়সের ভারে আর গান করতে পারেন না। ছেলে-মেয়েরাও ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিয়েছে। জীবিকার তাগিদে ছোট ছেলে কুলকুল ঢাকায় একটি চায়ের দোকান করে সংসার চালায়। এদিকে ফুলবানু দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থও হয়ে শয্যাশায়ী। গত দুই বছর ধরে পাচ্ছেন না সমাজসেবার বয়স্ক ভাতাটিও। যে কারণে চিকিৎসা সংকটসহ খাওয়া দাওয়ার খরচ জোগাতে পারছেন না। দুই মেয়ে খাবার খরচ চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি মেম্বার সোনা মিয়া জানায়, তিনি মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো এক নাম্বারে হয়তো টাকা চলে যায়। পরে সেই নাম্বারটি বন্ধ রাখে।
তিনি বলেন, উকিল মুন্সীর স্মৃতিকেন্দ্রসহ রাস্থাঘাট সব মিলিয়ে ২৮ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। এগুলোর নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কোনোভাবে দায়সারাভাবে করছে।
এদিকে ভাতা বন্ধের ব্যাপারে সমাজ সেবার উপ-পরিচালক মো. আলাল উদ্দিন আলাল জানান, তিনি অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি। জনপ্রতিনিধিও আমাদের কোনো তথ্য দেয়নি। তবে ভাতা যাতে দ্রুত পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা