নিজেকে জ্বীনের বেগম পরিচয়ে প্রতারণা করে দিনাজপুরের এক পরিবারের কাছ থেকে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ৪ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জব্দ করা হয় প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদী। রবিবার রিমান্ডের আবেদনসহ তাদেরকে আদালতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন কথিত জ্বীনের বেগম পরিচয় দেওয়া জনৈক বাবুর স্ত্রী লাইজু বেগম (৪০), সহযোগী চক্রের সদস্য তার ভগ্নিপতি আলতাফ হোসেন (৪০), আলতাফ হোসেনের মেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা (ভাগ্নি) আখি সুবর্না (৩০) এবং ছেলে (ভাগ্নে) অনুরাগ আল ইমরান আনন্দ (২৭)।
শনিবার দিবাগত রাতে দিনাজপুর পৌর শহরের পাটুয়াপাড়া জাগরনী ক্লাব সমাজসেবা অফিস সংলগ্ন নিজস্ব তিন তলা বাসায় অভিযান চালিয়ে জ্বীনের বেগমসহ ওই প্রতারক চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জ্বীনের বেগম পরিচয়দানকারী দুই নারী ও দুই পুরুষ প্রতারককে গ্রেফতারের সংবাদ নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, নিজেকে জ্বীনের বেগম পরিচয় দিয়ে সহজ সরল রোকেয়া রহমানকে টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন লাইজু বেগম। জ্বীনদের জন্য মসজিদ নির্মাণ করে দেওয়া এবং বেহেশতে যাবার কথা বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রথমে বিকাশ এবং পরবর্তীতে ব্যাংকিং চ্যানেল ২০১২ সাল থেকে গত ১১ বছরে ৩ কোটির অধিক টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রতারিত রোকেয়া রহমানের আমেরিকা প্রবাসি ছেলে সারোয়ার রহমান গত শনিবার কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রতারক পরিবারটির বাড়ী গাইবান্ধা জেলায়। বর্তমানে তারা দিনাজপুর শহরের পাটুয়াপাড়া মহল্লায় বসবাস করেন। অভিযানে ব্যাংকের চেকের পাতা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভিসা ডেভিট কার্ড একটি মোটরসাইকেল এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে।
কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতভর ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মমিনুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুম বিল্লাহ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাহ আল মামুন এবং তিনিসহ পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ প্রমুখ। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপপরিদর্শক ইন্দ্র মোহন রায়কে।
বিডি প্রতিদিন/এএ