ঝালকাঠি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে চলছে রুপসীবাংলা মেলা। গতকাল শনিবার ঝুকিপূর্ণ নাগরদোলা দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে তাদের বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সনাতন পদ্ধতিতে শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে কোনো নিরাপত্তা বলয় ছাড়াই নাগরদোলা চালানোয় এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শারমীন আক্তার, লামিয়া মৌ, সিরাজ উদ্দিন, মাইনুল ইসলাম জানান, রাত তখন পৌনে ১০টা, মেলার মাঠের পশ্চিম দিকে চলতে থাকা নাগরদোলাটির গতি হঠাৎ বেড়ে যায়। আর তখনই ছয়টি বক্সের দুটি বক্স একটির সথে আরেকটি লেগে যায়। এতে প্রায় ৩০ ফুট উপর থেকে ছিঁটকে মাটিতে পরে গিয়ে রক্তাক্ত আহত হয় তিনজন।
আহতরা হলেন ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলাবাগান এলাকার মিন্টু হাওলাদারের পুত্র নাইম হাওলাদার (১৩), সদর উপজেলার নবগ্রাম কালী আন্দার গ্রামের আব্দুস শুক্কুরের স্ত্রী মোসাম্মৎ পুতুল বেগম (৩৫) ও রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালি গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের পুত্র মো. ইদ্রিস আলী হাওলাদার (৩৩)।
এদিকে দুর্ঘটনার পর নাগরদোলা ও মেলা কর্তৃপক্ষ কেউই উদ্ধার কাজ বা হাসপাতালে এসে আহতদের চিকিৎসায় কোনো সহযোগিতা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে আহতদের খোঁজ নিতে রাতেই জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম এবং সিভিল সার্জন এইচ.এম জহিরুল ইসলাম হাসপাতালে যান। মেলার ব্যবস্থাপনা কমিটি বলছে আহতদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করা হচ্ছে।
তবে বিষয়টি মেলা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মেলা কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের জন্য সনাতন পদ্ধতির শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে (পুরাতন ট্রাক্টর মেশিন) নাগরদোলা চালাচ্ছিল।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও খুলনার চামেলী ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া পক্ষকালব্যাপী মেলাটি আগামী ১০ মার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
মেলার ব্যবস্থাপনায় থাকা চামেলী ট্রেডাস মালিক মো. রাসেল জানান, বরিশাল হাসাপাতালে গিয়ে আহতদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করা হচ্ছে। নাগরদোলা চলা অবস্থায় একটি সিটে থাকা সবাই বিতণ্ডায় জাড়িয়ে পরলে হঠাৎ করেই ইঞ্জিন থামিয়ে দেওয়া হয়। এসময় দু’টি বক্সের সাথে ধাক্কা লেগে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ওসি নাসির সরদার জানান, ঘটনার পর পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে সহায়তা করেছে। এখন পর্যন্ত আহতদের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল