২৪ মে, ২০২৪ ১৪:৫৭

গাইবান্ধার তিন উপজেলায় জামানত হারাচ্ছেন ৮ চেয়ারম্যানসহ ২৮ প্রার্থী

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার তিন উপজেলায় জামানত হারাচ্ছেন ৮ চেয়ারম্যানসহ ২৮ প্রার্থী

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন শেষ হয়েছে গত মঙ্গলবার (২১ মে)। এ নির্বাচনে গাইবান্ধা সদর, পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ এই তিন উপজেলায় ১৫ জন চেয়ারম্যান, ১৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১৭ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ না পাওয়ায় ওই তিন উপজেলায় ৮ জন চেয়ারম্যান, ৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ২৮ জন প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। 

তিন উপজেলার সহকারী রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষরিত প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুকূলে এক লাখ টাকা জমা দিতে হয়। আর ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য জমা দিতে হয় ৭৫ হাজার টাকা। নির্বাচনী এলাকার প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট যদি কোনো প্রার্থী না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের স্বাক্ষরিত ফলাফলে দেখা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৯ ভোটের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রদত্ত (কাস্টিং) ভোট ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫১। শতকরা হিসেবে ৩৮.১৪ শতাংশ। জামানত রক্ষায় প্রদত্ত (কাস্টিং) ভোটের ১৫ শতাংশ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীদের পেতে হতো ২২ হাজার ১১৮ ভোট। সে অনুযায়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হামিদ মিয়া (আনারস) প্রতীকে ২৫৭ ভোট, নূর-এ-হাবীব (টেলিফোন) ৪ হাজার ৯৫৭, মকদুবর রহমান সরকার (হেলিকপ্টার) ৭৭৭ ও মাজেদুল ইসলাম রিবন (ঘোড়া) প্রতীকে ৯৯০ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৮ ভোট পড়েছে। জামানত রক্ষায় প্রার্থীদের পেতে হতো ২২ হাজার ১১৭ ভোট। সে অনুযায়ী, প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক (উড়োজাহাজ) প্রতীকে ১২ হাজার ৯১১ ভোট, আল আমিন রুহুল (তালা) প্রতীকে ১১ হাজার ৭২২, নিজাম উদ্দিন খাঁন (মাইক) প্রতীকে ৭ হাজার ৪৯০, মাহমুদুর রহমান (বৈদ্যুতিক বাল্ব) প্রতীকে ১৬ হাজার ৪১৯, মিলন হোসেন (বই) প্রতীকে ১০ হাজার ৯০৮ ও সনজীবন কুমার দেব (টিয়া পাখি) প্রতীকে ১৩ হাজার ৬৩১ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩২ ভোট পড়েছে। জামানত রক্ষার জন্য প্রার্থীদের পেতে হতো ২২ হাজার ৫৫ ভোট। সে মোতাবেক, প্রার্থী তাসলিমা সুলতানা স্মৃতি (ফুটবল) প্রতীকে ১১ হাজার ১২৪, পারুল (বৈদ্যুতিক পাখা) ৩ হাজার ৯৯৫, রওশন আরা মুক্তি (সেলাই মেশিন) ৪ হাজার ৭৮১, শিল্পী খাতুন (প্রজাপতি) ১৫ হাজার ২৯৪ ও হাছিনা বেগম (কলস) প্রতীকে ৬ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

এদিকে পলাশবাড়ী উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ২৩ হাজার ২০৯ জন। এ উপজেলার চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৬৭ হাজার ২৯৩। জামানত রক্ষার জন্য প্রদত্ত (কাস্টিং) ভোটের ১৫ শতাংশ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীদের পেতে হতো ১০ হাজার ৯৪ ভোট। সে মোতাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী জরিদুল হক (কাপ-পিরিচ) প্রতীকে ৭ হাজার ৫১৯ ভোট, তহিদুল আমিন মন্ডল সুমন (ঘোড়া) ৮ হাজার ৫৮, নাজিবুর রহমান (আনারস) ৫ হাজার ৯৮১ এবং শামিকুল ইসলাম সরকার (শালিক) প্রতীকে ৫ হাজার ৪১৭ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী কেউই জামানত হারাননি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৬৬ হাজার ৮১। জামানত রক্ষার জন্য পেতে হতো ৯ হাজার ৯১২ ভোট। ফলে প্রার্থী জে এম হামিদা আক্তার চৌধুরী (সেলাই মেশিন) ৫ হাজার ১৬৮ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

অপরদিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৭২টি ভোটকেন্দ্রে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৫ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮। এ উপজেলায় ৯১ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শাকিল আলম বুলবুল (আনারস)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল লতিফ প্রধান (মোটর সাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ৮২ হাজার ৪৫ ভোট।

এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাস্ট হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮ ভোট। জামানত রক্ষার জন্য পেতে হতো ২৬ হাজার ৪৯০ ভোট। ফলে প্রার্থী পাপন মিয়া (তালা) প্রতীকে ১০ হাজার ৭২৯ ভোট, মাহাবুর রহমান (টিয়া পাখি) ১৫ হাজার ৬৫৩ এবং মেসবাহ নাহিফুদ দৌলা (টিউবওয়েল) ১৭ হাজার ১২০ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন। এ উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮। জামানত রক্ষার জন্য পেতে হতো ২৬ হাজার ৪৯০ ভোট। ফলে প্রার্থী ফাতেমা খাতুন (ফুটবল) ১৭ হাজার ২৮১ ভোট, আফরুজা খাতুন (হাঁস) ২৫ হাজার ৭৬৫, মমতা বেগম (কলস) ২৩ হাজার ১, সাকিলা বেগম (পদ্ম ফুল) ১২ হাজার ৯০৪ এবং সাথী আক্তার (বৈদ্যুতিক পাখা) প্রতীকে ৫ হাজার ৪৩১ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থী মোট কাস্টিং ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট পেলে নিয়ম অনুযায়ী জামানত ফিরে পাবেন। যদি ১৫ শতাংশের নিচে কেউ ভোট পান তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

বিডি প্রতিদিন/এএম

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর