পাহাড়ে এখন আর উৎকণ্ঠা নেই। উদ্বেগও কেটে যাচ্ছে। স্বাভাবিক হচ্ছে হাট-বাজার ও সড়ক। ঘরে ছেড়ে বের হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিরা। করছেন দৈনন্দিন কাজ।
গত শুক্রবার সহিংসতার ঘটনার পর চাপা আতঙ্কে স্থবির হয়েছিল রাঙামাটি। কিন্তু রবিবার ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে পাহাড়ে। অন্যদিকে নতুন কোনো অপশক্তি যাতে পাহাড়ের এ সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে, তার জন্য কঠোর অবস্থানে আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসেছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের বিশেষ টহল।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, সকল জাতি-গোষ্ঠী প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সম্প্রীতির সভা করা হয়েছে। এ সভার পর আর কোথাও গুজব আর উৎকণ্ঠা আমাদের কানে আসেনি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। মোটামুটি দোকান পাঠ ও বাজার সচল হতে শুরু করেছে। শহরে যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে আর কিছু দিন রাঙামাটিতে আইনশৃঙ্খালা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার থাকবে। সহিংসতার ঘটনায় যারা আহত হয়েছে, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরওও তালিকা করা হচ্ছে। সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া সহিংসতার দিন যার মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিবারকেও বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে সোমবার সকাল থেকে রাঙামাটি বনরূপা, তবলছড়ি ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় সাধারণ মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। স্বস্তিতে বাজার করছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিরা। স্বাভাবিক হয়েছে অফিস আদালতও। তবে এখনো খোলেনি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে, টানা ৭২ ঘণ্টা পর শেষ হয়ে হয়েছে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) ডাকা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি।
রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন জানায়, রাঙামাটি শহরের নতুন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গুজবকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। যারা ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুকে) গুজব ছড়াছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল করতে এসে তাণ্ডব চালায় বাঙালিদের দোকান-পাঠ, গাড়ি, মসজিদ ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের উপর। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় অনিক চাকমা নামে একজন নিহত হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই