সাজিদ প্রতি বছরই বৈশাখী মেলায় যায়। মেলা থেকে নানা রকম খেলনা কিনে আনে। আর কত কিছুই না খায়। কিন্তু নাগরদোলায় চড়তে সে ভীষণ ভয় পায়। যদিও সাজিদ এবার দশে পা দিল। গেল বছর সে তার আপুর সঙ্গে বৈশাখী মেলায় গিয়েছিল। সেবার আপু তাকে অনেক কিছু কিনে দিয়েছিল। বাঘের মুখোশ, বাঁশের বাঁশি, ঢোল, ডুগডুগি আরও কত কি! আপু তাকে খাইয়েছিল নিমকি, মুরালি, কদমা, বাহারি পিঠা, মুড়ি-মুড়কি আর মিষ্টি। তাই সাজিদের আনন্দের সীমা ছিল না। কিন্তু এর মাঝেও ভয় করল তখন, যখন সে আপুর সঙ্গে নাগরদোলায় চড়ে বসল। নাগরদোলা যখনই ঘুরতে শুরু করল, সাজিদের যেন মাটি ছেড়ে আকাশের দিকে ছুটে চলছে। সে আপুর হাত শক্ত করে ধরে রাখল। আপুও বুঝতে পারল- সাজিদ ভয় পাচ্ছে। তাই সে সাজিদকে জড়িয়ে ধরে রাখা। নাগরদোলার ঘূর্ণিপাকে সাজিদের মাথাও ঘুরতে থাকল। আর তার মাঝে এই ভয় হতে থাকল নাগরদোলা কখন জানি ছিঁড়ে পড়ে যায়। সে যেন নেমে যেতে পারলে এখন বাঁচে। আপুকে সে বলেই ফেলল, ‘আপু, আমার ভয় হচ্ছে। আমি নেমে যাব।’
কিছুক্ষণ পর নাগরদোলা থামল। আপুর হাত ধরে সাজিদ নেমে এলো। কিন্তু তার মনে হলো- পৃথিবী যেন ঘুরছে। আপু সাজিদের কাছ থেকে তার নাগরদোলায় চড়ার অনুভূতি জানতে চাইল। সাজিদ মুচকি হেসে দিয়ে বলল, ‘শুনেছি পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরে। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে মনে হচ্ছিল যেন পুরো পৃথিবী আমার চারদিকে ঘুরছে। সাজিদের কথা শুনে আপু হেসে দিল। আর বলল, ‘কই, চারপাশে সবকিছু তো ঠিক জায়গায়ই আছে। তাহলে শুধু তোমার মাথাটাই বোধ হয় একটু ঘুরেছিল। সাজিদ বলল, ‘কই, আমার মাথাও তো ঠিক জায়গায়ই আছে।’ সাজিদের পাকা কথা শুনে আপু হাসতে থাকল। সাজিদ তার হাতের ডুগডুগিটি মনের আনন্দে বাজাতে লাগল।