৪ আগস্ট, ২০২২ ১১:৩২

বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় হুমকিতে উন্নয়নকাজ

কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কায় ৩ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় হুমকিতে উন্নয়নকাজ

ফাইল ছবি

নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় থমকে গেছে সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। এ কারণে হুমকির মুখে পড়ছে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন। অথচ বালুমহাল ও ডুবোচরের কারণে নদীপথে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। একই সঙ্গে নাব্য হারাচ্ছে নদীগুলো। আর এ কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, এ রকম ৩ লক্ষাধিক মানুষ কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন।

সরকারি উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। কর্ণফুলী টানেলের কাজও শেষ পর্যায়ে। বড় মেগা প্রকল্পগুলো আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে। এ মেগা প্রকল্পগুলো বদলে দিচ্ছে দেশের প্রতিচ্ছবি। দেশজুড়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ অবকাঠামোগত উন্নয়ন যে শুধু সরকারই করছে তা নয়, বেসরকারি উদ্যোগেও হচ্ছে। আর    অবকাঠামো উন্নয়নের অন্যতম উপকরণ হচ্ছে বালু। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে বালু উত্তোলন নিয়ে একটি গোষ্ঠী অপরাজনীতি ও অপপ্রচার করছে এবং বিভিন্ন মহলে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে।

জানা যায়, দেশে ১ হাজার ৩০০ নদ-নদী রয়েছে। জোয়ার-ভাটা ও বন্যায় এসব নদ-নদীতে প্রচুর পলিমাটি জন্মায়। নদ-নদীগুলো ভরাট হয়ে যায় আর বিভিন্ন স্থানে চর জেগে ওঠে। এসব কারণে নদীর গতিপথ ও নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এসব সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকার ২০১০ সালে নদ-নদীগুলোকে খনন করে যান চলাচলের উপযোগী করার বিশেষ উদ্যোগ নেয়। ওই সময় ড্রেজিং খাতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শত কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। বালু উত্তোলন এবং ড্রেজিংয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রায় ৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সঠিকভাবে বালু উত্তোলনের জন্য সরকার বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ প্রণয়ন করে। এ আইনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন এবং নদ-নদী খননের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যক্রম প্রণয়ন করে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন নদ-নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। আবার জাতীয় কমিটি, জেলা পর্যায়ের কমিটি যথাথভাবে কাজ না করার ফলে বিভিন্ন মহল অপশক্তি প্রয়োগ করে এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করেছে। কেউ কেউ ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকায় বালু উত্তোলন করেছে। এর ফলে বালু উত্তোলন নিয়ে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলেন, ‘আমাদের যে নদ-নদীগুলো রয়েছে, সেই নদ-নদীগুলোয় আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্টভাবে বালুমহাল চিহ্নিত করা এবং বালুমহাল চিহ্নিত করে সেগুলো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া দরকার, যা ২০১০ সালের আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইজারার মাধ্যমে যদি বালু উত্তোলন করা যায় তাহলে সরকার প্রচুর রাজস্ব পাবে। একইভাবে সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে। একটি সুষ্ঠু নীতিমালা মেনে বালু উত্তোলন করে আমরা যেমন চাহিদা মেটাতে পারব, তেমনি রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে।’ তারা বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধ হলে রাস্তাঘাট ও ব্রিজের উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে। ৩ লাখ মানুষ বেকার হবে। মুখ থুবড়ে পড়বে শত কোটি টাকার বিনিয়োগ।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর