বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ধর্ম

আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন হওয়া

মাও. সেলিম হোসাইন আজাদী

বিনয় বা নম্রতার ধারণাকে দুই ভাগে আলোচনা করা যায়- ক. আল্লাহর প্রতি বিনয়ের মানে আল্লাহর ওপর ইমান এবং তাঁর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ। প্রশ্নাতীত আনুগত্যের সঙ্গে তাঁর আদেশ যথাবিহীত বিনয়সহকারে পালন করা। খ. অন্যান্য মানুষের প্রতি বিনয় ও নম্রতার মানে সব মানুষের প্রতি ভদ্র আচরণ। সব ধরনের গীবত, অহংকার, আত্মপ্রদর্শন, অহমিকা, অপরের ওপর প্রভুত্ব করার প্রবণতা পরিহার করে নম্রতা অবলম্বন। কোরআন মতে, একমাত্র যে বিষয়ের ভিত্তিতে মানুষের একে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারিত হবে তা হচ্ছে- তাকওয়া এবং একজন মুমিনের নম্র-ভদ্র আচরণ। কোরআন রসুল (সা.)-কে উপদেশ দেয় বিশ্বাসীদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতে। কোরআন সব বিশ্বাসীকে সতর্ক করে দেয় নিজের অতিমূল্যায়ন করা ও গর্ব-অহংকার করা থেকে দূরে থাকতে। বিনয় সম্পর্কে রসুল (সা.) বলেছেন, 'আল্লাহ আমার কাছে ওহি পাঠিয়েছেন যাতে তোমরা বিনম্র হও। তোমাদের মধ্যে কেউ যেন অহংকারী না হয় এবং তোমাদের কেউ যেন কোনোভাবে অন্যের ওপর কোনো আক্রমণ বা অত্যাচার না করে।' যে নম্রতা চর্চা করবে আল্লাহ তার সম্মান বাড়িয়ে দেবেন। আল্লাহ বলেন, 'আমি শুধুমাত্র তাদের দোয়া কবুল করি, যারা আমার ক্ষমতা ও মর্যাদার সামনে বিনয়াবনত হয়, যারা আমার কোনো সৃষ্টির সঙ্গে রূঢ় বা রুক্ষ ব্যবহার না করে, যারা আমাকে অমান্য করে কোনো রাতে নিদ্রা না যায়।'

এসব হাদিস ছাড়াও বলতে হয় যে, রসুল (সা.)-এর গোটা জীবনই ছিল বিনয় ও নম্রতার এক অনুপম অনুকরণীয় আদর্শ। বাড়িতে তিনি স্ত্রীদের গৃহস্থালির কাজে সাহায্য করতেন, তিনি নিজের কাপড় ও জুতা সেলাই করতেন, ছাগীর দুধ দোহন করতেন। এক ভ্রমণের সময় তিনি এবং তাঁর সাথী খাবার তৈরির জন্য যাত্রাবিরতি করলেন; তিনি অলসভাবে বসে থাকলেন না বরং বললেন, '...আমি কোনো কাজ না করে বসে থাকা এবং তোমাদের ওপর কিঞ্চিৎ শ্রেষ্ঠত্ব অনুভব করাটাকে ঘৃণা করি।' অতঃপর তিনি জ্বালানি কাঠ কাটতে গেলেন। যখন তিনি কোনো লোকজনের সমাবেশে যোগ দিতেন তখন সব সময় খালি জায়গায় বসতেন, কখনো সামনে যাওয়ার জন্য ঠেলাঠেলি করতেন না।

লেখক : খতিব, হাতিরপুল জামে মসজিদ, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

 

 

 

সর্বশেষ খবর