সামাজিকতা রক্ষার দায়বদ্ধতা থেকে সাবেক সহকর্মী সৈয়দ মুস্তফা মবিনের বাড়ি গিয়েছিলাম গত শতকের কোনো এক আসন্ন সন্ধ্যায়। এটা সেই সময়কার কথা, যখন উত্তরা এলাকায় নতুন নতুন দালানকোঠা নির্মাণের গতি জোরদার হতে শুরু করছিল। ড্রয়িং রুমে বসে গৃহস্বামী মবিন ও তিন ব্যক্তি ‘বাসি ভাত স্বাদুকরণ প্রণালি’ নিয়ে আলোচনায় মগ্ন। আরও একজন সেখানে বসা; তিনি শুনে যাচ্ছেন, কথা বলছেন না। তিনি মাঝেমধ্যে নড়েচড়ে বসছেন আর টাইয়ের গেরো একবার আঁটছেন তো আরেকবার ঢিলে করছেন। সৈয়দ মবিন বলেন, ‘এসো পরিচয় করিয়ে দিই। আরিফুল হচ্ছে আমার জ্যাঠাসের মেয়েজামাই, ফরেন সার্ভিসে আছে।’
‘স্লামালেকুম’ উচ্চারণপূর্বক দাঁড়িয়ে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন জামাই আরিফুল। ‘আস্সালামু আলাইকুম’ শব্দটি যে বিকৃত করে তার হাতে হাত মেলানোর জন্য মনের সাড়া পাই না। তবু করমর্দন করি। কেননা ওটা না করলে লাল রঙের টাই আর থ্রিপিস স্যুট পরা ব্যক্তির খালুশ্বশুরের হৃদয়ে চোট লাগবে কি লাগবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। খালুশ্বশুর বলেন, ‘তিন বছর ইন্দোনেশিয়ায় কাটানোর পর আরিফুল মাস ছয়েক আগে ঢাকায় বদলি হয়ে এসেছেন। সরকারি যে বাসভবনে তাঁকে থাকতে দেওয়া হয়েছে, তা জামাই বাবাজির মতে গরু-ছাগলেরও বাসযোগ্য নয়।’
চার আলোচকের অন্যতম সিদ্দিক পাটোয়ারী বলেন, ‘জামাই যা বলবে সেটাই ষোলো আনা সত্য বলে মেনে নিতে হবে? আমাদের কন্যা তো ট্যারা কিংবা ল্যাংড়া নয়। গরু-ছাগল যে জায়গায় থাকতে পারবে না, সেখানে আপনি আড়াই মাস ধরে সপরিবার বাস করছেন। হাউ?’
‘আঁক্ল! প্লিজ লেট মি এক্সপ্লেন’ বলেন আরিফুল, ‘ইন্দোনেশিয়ায় পাঁচ রুমের বাড়িতে থেকেছিলাম। সেই তুলনায় এখানকার গ্রেভ কন্ডিশন বোঝানোর জন্য ওরকম বলেছিলাম। গরু-ছাগল আক্ষরিক অর্থে বলিনি। ছোট্ট ছোট্ট তিন রুমের ফ্ল্যাটে বাস করবার কষ্ট থেকে যা বলেছি সেজন্য আই য়্যাম একসট্রিমলি স্যরি।’ পাটোয়ারী বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ায় পাঁচ কামরার বাড়িতে আপনাকে থাকতে দেওয়া হয়েছিল-বিদেশে আপনার মর্যাদা উঁচু করে রাখার জন্য। স্বদেশেও ওরকম সুবিধার জন্য জেদাজেদি রেসপনসিবল গভর্নমেন্ট অফিসারকে মানায় না।’
আরেক আলোচক আসকার রশিদ বলেন, ‘বাসি ভাত চর্চায় বিঘ্ন ঘটিয়ে গরু-ছাগল নিয়ে মেতে ওঠা কি ঠিক হলো?’ সৈয়দ মবিন বলেন, ‘ঠিক আছে। বাসি ভাতে ফেরা হোক। তুমি কি বলছিলে যেন? ও হ্যাঁ। বলছিলে পিঁয়াজ কুচো ও হলদে-মরিচ একসঙ্গে ভেজে...।’ আসকার রশিদ বলেন, ‘বাসি ভাতের সঙ্গে ওগুলো সরষের তেলে ভাজলে অমৃত তৈরি হয়ে যায়। এবার সেই অমৃত খাও ভাজা ডিম দিয়ে। আহ্ কী মজা!’
‘ওভাবে খাওয়া যায়!’ বিস্ময় প্রকাশ করেন আরিফুল, ‘তাইলে একদিন খেয়ে দেখতে হয়।’ সৈয়দ মবিন বলেন, ‘কখনো ওরকম খাওনি? আশ্চর্য! তোমার বাবা ছিলেন মোটামুটি চলে কিসিমের মোক্তার। তোমরা ছয় ভাইবোন। রোজ সকালে তোমাদের নাশতার জন্য মোরগ-পোলাউ বা হালুয়া-পরোটা জোগাড় করবার সামর্থ্য তো ওই মোক্তারের ছিল না। আমার বাবা ছিলেন ভালো রোজগারি উকিল। আমরা চার ভাইবোন স্কুলজীবনে মাসে অন্ততপক্ষে ছ’দিন বাসিভাত ভাজা খেয়ে সকালের নাশতা সেরেছি।’
‘জামাই আর খালুশ্বশুরের ভাষ্য থেকে একটা আইডিয়া করা যাচ্ছে’ বলেন, আলোচক তাজুল হক। (এতক্ষণ তিনি মিতবাক ছিলেন)। আমি বললাম, সেটা কী। তিনি বলেন, উকিলবাড়ির খাদ্যব্যবস্থাপনা সর্বদাই মোক্তারবাড়ির খাদ্যব্যবস্থাপনার চেয়ে উঁচু না-ও হতে পারে। সমস্যা অবশ্য এটা নয়। সমস্যা হলো, অভিজাত নামক মায়াহরিণী পাকড়ানোর হাস্যকর চেষ্টা। এই প্রক্রিয়ায় মানুষ বনে ঢুকে পড়ে, হরিণীর পেছনে ছুটতে ছুটতে বন্য হয়ে যায়। ধাওয়া করে অবিরাম। তবু বনপথে ছোটা মায়া হরিণীর নাগল পায় না।
২. মবিন আর আরিফুল একই এলাকার বাসিন্দা। তাই মবিন জানেন মোক্তারের পুত্র-কন্যারা ছোটবেলায় এমনকি যৌবনেও কত কষ্টে দিনাতিপাত করেছে। কষ্ট কাটানোর পর সুদিনের ছায়াতলে জায়গা পেয়ে ‘সোনার চামচ মুখে জন্ম আমার’ ভঙ্গি যারা দেয় মবিন তাদের ওপর আগুনবর্ষণে প্রস্তুত। তাই জামাই বাবাজির মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন তিনি। আস্সালামু আলাইকুম-এর জায়গায় স্লামালেকুম এবং আংকেল-এর জায়গায় আঁক্ল উচ্চারণ শোনার পর আমারও মনে হয়েছে লোকটা সুস্থ নয়।
‘একদা কষ্টে ছিলাম’ স্বীকার করতে যাদের খুবই কষ্ট হয় তারা স্মৃতি ঝাপসা হওয়াজনিত বিকারে আক্রান্ত। এরকম মনে করেন মনোহর আলী। নিজ হাতে নিজকে গড়া এই ব্যবসায়ীকে শ্রদ্ধেয় জীবনসংগ্রামী বলে মানি আমরা, মানে আমি আর তিন বন্ধু সাইফ ইকবাল, সালেহ কবির ও কমরুদ্দিন। রাজধানী থেকে যখন স্বজেলায় যাই, প্রিয় ‘মনর কাগা’র সঙ্গে দেখা করি আমি। আমার কারণে ইকবাল, কবির আর কমরও তাঁর সঙ্গে সময় কাটায়।
একবার শীতসন্ধ্যায় মনর কাগার (মনোহর কাকা) বাড়িতে তাঁরই পরিবেশিত মোগলাই পরোটায় কামড় বসিয়ে মহাচিন্তক সাইফ ইকবাল বলে, নিজেকে অভিজাত বলে জাহির করবার লালসায় গরিবি জীবন স্মৃতি থেকে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করা হয়। কারণ দারিদ্র্যমণ্ডিত হয়ে মহত্ত্ব অর্জনের দিন বাসি হয়ে গেছে। এখন মানুষ কামনা করে দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব/তাই তারা থাকবে না আর নিঃস্ব। আমি গরিব, গরিবির জন্য আমি গর্বিত- এমন কথা এ যুগে পাগলও বলছে না।
সমর্থনব্যঞ্জক স্মিত হাসি ফুটে ওঠে আমার মুখে। ইকবাল ভাবল টিটকারি দিচ্ছি। বলল, ‘তুমি বোধ হয় বিরক্ত হচ্ছ। ওকে। লেট আস মুভ টু ডিফারেন্ট টপিক।’ তাকে বলি, ‘ভুল বুঝো না প্লিজ।’ গরিবিবিষয়ক একটি ঘটনা মনে হয়ে গিয়েছিল। কবি-ঔপন্যাসিক-নাট্যকার সৈয়দ শামসুল হকের গুলশানের বাড়ি গিয়েছিলাম তাঁকে জন্মদিনের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। সঙ্গে ছিলেন সাহিত্যিক ড. অনু হোসেন (অকালপ্রয়াত) ও আলোকচিত্রী মাসুদ আনন্দ। বহু গুণমুগ্ধ ফুলের তোড়া তুলে দিচ্ছিলেন সৈয়দ হকের হাতে। তিনি আমাদের সাদরে নিয়ে গেলেন ডাইনিং রুমে। দুপুরের খাবার খেতে চেপে ধরলেন। আমরা খাচ্ছি; পাশে বসে তিনি চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিচ্ছিলেন। আলাপ জমে উঠল।
অনু হোসেন কথায় কথায় বলেন, ‘হক ভাই, আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে জঘন্য কী।’ সৈয়দ হক বলেন, “দারিদ্র্য। অথচ দারিদ্র্যকেন্দ্রিক কত রকম ইতিবাচক পদ্য যে বাঙালিরা আওড়ায়। শুনে কাঁদতে ইচ্ছে করে। কাজী নজরুল ইসলামকেই দেখ। তিনি লিখেছেন-‘হে দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছ মহান। ...’ আরে ভাই দারিদ্র্য এক কুৎসিত ব্যাপার। যা কুৎসিত তা মানুষকে মহান বানায় কীভাবে! কুৎসিতকে বুকে জড়িয়ে ধরামাত্রই তো আত্মা কলুষিত হতে থাকবে। স্বেচ্ছায় আত্মাকে কলুষিতকরণ মহত্ত্বের পরিচায়ক নয়।”
‘ঠিক আছে। তাহলে গরিবি নাড়াচাড়ার প্রোগ্রামই চলতে থাকুক’ সহাস্যে বলে ইকবাল। পরক্ষণেই মনোহর আলী বলে উঠলেন, ‘আসুন স্যার আসুন।’ আড্ডাস্থলে প্রবেশ করলেন স্থানীয় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমল মজুমদার। তাঁর আরেক পরিচয় তিনি ওস্তাদ আয়াত আলী খানের শিষ্য, ওস্তাদের কাছে তবলা বাজানোর তালিম নিয়েছেন। বিমলদা শুনেছেন, বাড়ি এসেছি। কাল সকালে ফিরে যাব। তাই আজ সন্ধ্যার মধ্যেই সাক্ষাতের কাজটা সারতে এসেছেন। তাঁর গলায় মাফলার; খুক খুক কাশছিলেন। জানালেন পাঁচ দিন ধরে শুকনো কাশিতে ভুগছেন।
ডাক্তারকে কল দিতে উদ্যত হলেন মনোহর, ‘মাঘের শীত চলছে স্যার। এ সময় কোনো অসুস্থতাকেই অবহেলা করা ঠিক না। আমি ডাক্তার সোহরাবকে আসতে বলি।’ বিমলদা বলেন, ‘ডাক্তার ফাক্তার ডেকে এনে পয়সা পানিতে ফেলো না। একটা টোটকা ফর্মুলা পেয়েছি। আজ রাত থেকে ওটাই কাজে লাগাব। শুকনো কাশি গলায় পরবে ফাঁসি।’
মনোহর লেগেই রইলেন, ‘স্যার প্লিজ স্যার। একটু ডাক্তার দেখান।’ বিমল মজুমদার বলেন, ‘এত সিরিয়াস হচ্ছ কেন? ডাক্তার কী ম্যাজিক জানে! তাইলে ডাক্তাররা কী করে তোমারে বলি।’ বিমলদা বললেন। শুনে মজা পাই আমরা। তিনি কী বলেছিলেন-তা এই লেখার একেবারে শেষদিকে নিবেদন করব।
৩. মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন মনোহর আলী। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ দারুণ। স্বশিক্ষিত তিনি। তাঁর মন্তব্যে মুগ্ধকর দিকটি মনে করিয়ে দেয় রবিঠাকুরকে, যিনি বলে গেছেন, ‘উচ্চশিক্ষিত মানেই স্বশিক্ষিত।’ মনোহর তাঁর জিরো থেকে হিরো হওয়া কাহিনি বর্ণনার সময় বলেন, সমাজগতি ছন্দময় না হওয়ার পেছনে যেসব কারণ ক্রিয়াশীল তার অন্যতম হচ্ছে বহুজনের অন্ন নিয়ন্ত্রকরা ওপরে ওপরে তালেবর হলেও ভিতরে ভিতরে ভীষণ কাঙাল।
তিনি জানান, ছ’বছর বয়সকালে তাঁর বাবা নিরুদ্দেশ হন। পাঁচ বছর পর জানা গেল, বাবা সুন্দরবন এলাকায় কাঠগুদামের শ্রমিক হয়েছেন এবং ওখানে আরেক সংসার করছেন। মনোহরের দুই বছরের বড় একটি বোন আর দুই বছরের ছোট আরেক ভাই মোট তিন সন্তানকে নিয়ে অকূলসাগরে ভাসতে লাগলেন মা। গ্রামের পেশকারবাড়ির কদম হাজি তাঁর ধানভানার মিন্তি পদে চাকরি দিলেন মাকে। লোকটার ব্যবহার কর্কশ, অন্তরটা তুলোর মতো নরম। অসহায় মা দুশ্চিন্তায় কাঁদছেন দেখলে কদম হাজি বলতেন, খবরদার কাঁদবি না। যুদ্ধ করতাছিস। যুদ্ধ কর। যুদ্ধের মধ্যে কান্দনের সিস্টেম নাই।
দুই বছরের মধ্যে মা ওই বাড়ির প্রধান পরিচারিকায় উন্নীত হলে তাঁকে ‘পোলাপানরে লইয়া আংগো এইখানে চইলা আয়’ নির্দেশ দেন কদম হাজি। তিনি মনোহরকে স্কুলে ভর্তি করে দেন। অষ্টম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার আগে ঘোষণা দেন- ‘মনইররা ফার্স্ট না হইলে হিজার ঠ্যাং ভাঙ্গি ফালামু।’ ফার্স্ট নয়, সেকেন্ডও নয় মনোহর হয়েছিলেন সপ্তম। ভয়ার্ত মনোহর পেশকারবাড়ি থেকে হাওয়া হয়ে গেলেন।
চট্টগ্রাম নগরীতে কুলি হলেন। রেস্তোরাঁর বেয়ারা হলেন। ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সেলসম্যান ছিলেন চার বছর। স্টোরের মালিক কিছু পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় নামিয়ে দেন মনোহরকে। নানারকম ব্যবসায় হাত পাকানোর পর তাঁর ভাষায় দুই পইসা হাতে আসায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে পেশকারবাড়িতে ফিরলেন। তত দিনে কদম হাজি পরলোকে। কদমের লাখপতি ছোট ভাই রহম আলী তাঁর মেয়েকে ছেলের বউ বানানোর জন্য মনোহরের মাকে প্রস্তাব দেন। অথচ এই লোকটাই ‘ফকিন্নি আর ফকিন্নির বাচ্চাগুলানরে লাথি মাইরা’ বের করে দেওয়ার জন্য বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঘ্যানর ঘ্যানর করেছেন এত দিন।
রহমের মেয়েকে বিয়ে করলে ‘জাতে’ উঠতে পারতেন মনোহর। তবু করলেন না। কেন করলেন না? গ্রামে গুঞ্জন ওঠে, ধানবাঁধনির পোলা হইয়া মনিবগোষ্ঠীর মাইয়ারে বিয়াকরনের সাহস হয় নাই। মনোহর আলী বলেন, ‘আমি তো কাঙাল। রহম আলী কাঙালেরও কাঙাল। এমন লোকের মেয়েরে স্ত্রীর মর্যাদা দিলে কাঙাল হিসেবে কি আমার ইজ্জত থাকে!’
সর্বাত্মক অজ্ঞতা : হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমল মজুমদার টোটকা ওষুধ দ্বারা কফমুক্ত হওয়ার সংকল্প ঘোষণার সময় ডাক্তারদের সম্পর্কে বলেন, ‘চিকিৎসকরা এমন এক ধরনের মানুষ, যারা এমন সব ওষুধের নির্দেশ দেন যেগুলো সম্পর্কে তারা খুব অল্পই জানেন। আর এমন সব রোগ ভালো হওয়ার ওষুধ দেন, যে রোগ সম্পর্কে আরও কম জানেন এবং এমন লোকদের ওষুধ দেন, যাদের সম্বন্ধে তারা একেবারে কিছুই জানেন না।’ আমরা সমস্বরে বলে উঠি-‘চমৎকার কয়েছেন বিমলদা।’ তিনি বলেন, ‘আমার কথা না রে। এসব কয়ে গেছেন মহামতি ভলতেয়ার।’
লেখক : সাংবাদিক