সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

হুমকিতে বনানী লেক

বাঁচান, হৃৎপিণ্ডের মতো জলাশয়টিকে

গুলশান লেকের বনানী অংশ কোনোভাবেই রক্ষা করা যাচ্ছে না। সেখানে নানা রঙের নকশা অাঁকাঅাঁকি, পরিকল্পনা গ্রহণ, বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ বরাদ্দ সত্ত্বেও দখল-দূষণে রাজধানীর হৃৎপিণ্ডের মতো নয়নাভিরাম লেকটি হারিয়ে যাচ্ছে। সুখের কথা, সম্প্রতি বাড্ডা অংশে সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে রাজউক লেকটি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। কিন্তু বনানী অংশে লেকের দুই পাড় অরক্ষিত থাকায় প্রতিনিয়ত দখল হচ্ছে। দখলদারদের উচ্ছেদ করে লেকের দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বার বার উচ্ছেদ অভিযান চললেও ওয়াকওয়ে আর নির্মাণ হয় না। আর এ কারণেই সুরক্ষা হচ্ছে না বনানী অংশের লেক। ওয়াকওয়ের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারিত না থাকার সুযোগে লেকে রাতের অাঁধারে ময়লা-আবর্জনা, ইট-সিমেন্টের সুরকি ফেলে ভরাট করে দখলবাজরা। ভরাটকৃত জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয় বস্তিসহ নানা স্থাপনা। অভিজাত বাসাবাড়ির বারান্দা নির্মিত হচ্ছে লেকের জায়গায়। বানানো হচ্ছে ক্লাব, গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। টহল পুলিশের হাতে কিছু দিয়েই ইটের খোয়া, বালুর বস্তা, ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে লেক। খাল-লেক রক্ষায় সরকারের উদাসীনতার কারণে দর্শনীয় এ লেকের অস্তিত্ব আজ বিলীন প্রায়। বনানী লেকটি ঢাকার মধ্যভাগে অবস্থিত হওয়ায় পরিবেশগতভাবে এর গুরুত্ব রয়েছে। গুলশান লেকের অস্তিত্ব রক্ষায় রাজউক প্রকল্প নিলেও তার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কিনা সংশয় রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় গুলশান-বাড্ডা শুটিং ক্লাব থেকে মরিয়ম টাওয়ার-২ পর্যন্ত ৪০ ফুট চওড়া সড়ক বা ড্রাইভওয়ে এবং লেকের উভয়পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণের কথা থাকলেও সড়কের বাস্তবায়ন বিঘি্নত হচ্ছে দখলদারদের দৌরাত্দ্যে। এর আগে বনানী অংশের লেক রক্ষার ব্যাপারে হাইকোর্ট ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এতে লেকের সীমানা জরিপসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। তবুও বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারিভাবে দখল এবং ভরাটের ফলে এ লেকের আয়তন অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে। লেক দখলকারী সব অপরাধীকে গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার-প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হোক। লেকটিকে বাঁচিয়ে রাখুন, বাঁচিয়ে রাখুন জনকোলাহলে অস্থির নগরীর হৃৎপিণ্ডের মতো এই জলাশয়টিকে।

সর্বশেষ খবর