বুধবার, ১ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

আইনের শাসন

বিনিয়োগের এ পূর্বশর্ত পূরণে উদ্যোগী হোন

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আইনের শাসনের গুরুত্বকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রথমেই দেখতে চায় সংশ্লিষ্ট দেশে আইনের শাসন কী রকম। তারা যে টাকা বিনিয়োগ করবেন তা তুলে নেওয়ার নিশ্চয়তা আছে কিনা। সংশ্লিষ্ট দেশে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয় কিনা। তারা যদি কোনো মামলায় পড়েন তবে তাদের টাকা দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকবে কিনা। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সমিতির ছয়বারের সভাপতি শামসুল হক চৌধুরীর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধান বিচারপতির দেওয়া বক্তব্য তাত্পর্যের দাবিদার। বিনিয়োগ আকর্ষণের সব পূর্বশর্ত থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিতভাবে আসছে না আইনের শাসনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকার জন্য। বাংলাদেশ ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ। অভ্যন্তরীণ বাজারও বিশাল। বাংলাদেশে সস্তা শ্রমের সংস্থান রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের কাছে কাম্য। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিদ্যুৎসহ জ্বালানি ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতা অনেকাংশ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। বিনিয়োগসংক্রান্ত আইনকানুন দুনিয়ার অনেক দেশের চেয়ে উদার হওয়া সত্ত্বেও আইনের শাসনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা এবং আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার জন্য বিদেশি বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আকর্ষিত হচ্ছে না। দেশি বিনিয়োগকারীরাও একই কারণে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ না থাকায় দেশে বেকারত্বের হার বাড়ছে। সামাজিক ক্ষেত্রে অসহিষ্ণুতা সৃষ্টির আশঙ্কা সৃষ্টি করছে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব বাড়ার ঘটনা। বাংলাদেশের অবস্থান অর্থনৈতিক দিক থেকে শক্তিধর দুই দেশ চীন ও ভারতের মাঝখানে। চীনে শ্রমের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেক বিনিয়োগকারী তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরে আগ্রহী। কিন্তু আইনের শাসনের ক্ষেত্রে সংকট থাকায় এবং আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার ভয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এক পা এগিয়ে দুই পা পিছিয়ে যাওয়ার সংশয়ে ভুগছেন। দেশের অর্থনীতিকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়া এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ধরে রাখতে হলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। এ জন্যই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হতে হবে।  রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটিয়ে সরকারকে নিতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর