বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিবিএ সমাচার

আত্মসেবা ও লুটপাটে মগ্ন ওরা!

দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সব আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যেন সিবিএ নেতাদের হাতে জিম্মি। সিবিএ নেতারা দৃশ্যত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হলেও তাদের দাপটের কাছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তারাও থাকেন কোণঠাসা। অন্যদের বেলায় তো কোনো কথাই নেই। নেতারা যে বেতন পান তাতে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর কথা। কিন্তু সিবিএ নামের আলাদিনের চেরাগের জোরে কোটিপতি বনে যাওয়ার সংখ্যাও খুব একটা কম নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে যারা সিবিএতে আসীন তাদের প্রায় সবাই কোটিপতি এটি একটি ওপেন সিক্রেট। বলা হয় ব্যাংক লুটপাটের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হন সিবিএ নেতারা। ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে যে অর্থ লোপাট করা হয়, তার সঙ্গে সিবিএ’র সংশ্লিষ্টতা খালি চোখেও ধরা পড়ার মতো। সিবিএর মোহনীয় জাদুর প্রভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সিবিএ নেতারা বছরের পর বছর আঁকড়ে আছেন একই পদ। অন্য সবাই পদোন্নতির জন্য পাগলপ্রায় হয়ে উঠলেও সিবিএ নেতাদের মনোভাব নড়ন-চড়নের বিপক্ষে। তিতাস গ্যাসের সিবিএকে বলা হয় টাকা বানানোর মেশিন। সিবিএ নেতাদের কেউ কেউ রাজধানীতে একাধিক ভবনেরও মালিক। সরকারি সংস্থাগুলোতে যারা কর্মরত তাদের একাংশ এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বে বিশ্বাসী। সিবিএ নেতারা এদিক থেকে এক কাঠি এগিয়ে। ক্ষমতার অপচর্চায় সিদ্ধহস্ত সিবিএ নেতাদের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যাচ্ছেতাই অবস্থা বিরাজ করছে সাড়ে চার দশক ধরে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বন্ধ করে পিকনিক, যাত্রীদের জিম্মি করা— এমন কোনো অনিয়ম নেই যার সঙ্গে সিবিএ নেতারা জড়িত নয়। শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য দরকষাকষি সিবিএর কাজ হলেও দেশের সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নেতাদের তত্পরতা আত্মসেবার মধ্যে সীমাবদ্ধ। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেউলিয়া বানিয়ে এদের অনেকেই এখন কোটিপতি। শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ নয়, যে প্রতিষ্ঠান তাদের অন্ন জোগায় তার অস্তিত্ব বিলোপের যত অপকর্মেও তারা জড়িত। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই বিভীষণদের দৌরাত্ম্য থামানোর কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর