শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

একুশের বইমেলা

সত্য সুন্দর কল্যাণের উন্মেষ কাম্য

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে বলেছেন, বই পড়ার অভ্যাস তরুণদের বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করতে পারে। বিপথগামীরা সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে সুপথে ফিরে আসতে পারে এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন তিনি। বাঙালির দেদীপ্যমান বাতিঘর বইমেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য শুধু প্রাসঙ্গিকই নয়, দিকনির্দেশনারও দাবিদার। মানুষের মনের অন্ধকার ঘোচাতে বই পড়া বা জ্ঞান অন্বেষণের কোনো বিকল্প নেই। বিপথগামিতার জন্য দায়ী সঠিক পথের দিশা না পাওয়ার সীমাবদ্ধতা। একুশের বইমেলা বাঙালির জ্ঞান আহরণের বাতিঘর হিসেবে বিরাজ করছে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, বুড়িগঙ্গা নদীপাড়ের মানুষের জ্ঞানচর্চায় বইমেলা যেমন অবদান রাখছে তেমনি দেশের কবি-সাহিত্যিক-লেখক এবং পাঠককুলের মিলনমেলা হিসেবে জ্ঞান ও সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্রভূমি হিসেবে রাখছে তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয়েছিল সাড়ে ছয় দশক আগে ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। বাঙালি পরিচয় সামনে নিয়ে আসতে ভূমিকা রেখেছিল সে আন্দোলন। বলা যায়, ভাষা আন্দোলন ছিল মুক্তিযুদ্ধেরও সূতিকাগার। বাঙালির বিকাশের প্রতিটি স্তরে ভাষা আন্দোলন এবং একুশে বইমেলার স্মরণীয় অবদান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবারে এমন একসময় একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেছেন, যখন জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প দুনিয়াজুড়ে বড় সমস্যা হিসেবে বিরাজ কাছে। বিশ্বশান্তির জন্য উগ্রবাদের চর্চা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশেও এ নোংরা দানবের কালো থাবা বিস্তার করেছে। বিপথগামীদের কারণে ঘটেছে রক্তাক্ত ঘটনা। বিপথগামীর সংখ্যা অতি সামান্য হলেও তারা বাঙালি জাতির উদার অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যের জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে। যে জাতির সন্তানরা প্রাণ দিয়েছে ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য, যে জাতি সম্পর্কে বহির্বিশ্বে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে গুটিকয় বিপথগামীর উগ্রবাদ চর্চা; তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে এবং তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের কালো ছায়া থেকে মুক্ত রাখতে মুক্তবুদ্ধিচর্চায় গুরুত্ব দিতে হবে। বই পড়ে জ্ঞান অন্বেষণ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের প্রতি তরুণদের মমত্ববোধের উন্মেষ ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর