মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বানভাসিদের দুর্ভোগ

এনজিও, সামাজিক সংগঠনের সক্রিয়তা কাম্য

বানভাসি মানুষের দুঃখ ক্রমেই বাড়ছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও তাদের ভোগান্তি কমছে না। পদ্মা, সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বাড়ছে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও ওষুধ সংকটেও ভুগছে মানুষ। সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা চললেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। মানুষ প্রয়োজনমতো ত্রাণ পাচ্ছে না। পানিবন্দী লাখ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। বন্যার পাশাপাশি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে নদী ভাঙন। পদ্মা অববাহিকায় নদী ভাঙন মারাত্মক রূপ নিয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলের জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে বন্যার্তদের জীবন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী দুই তিন দিনে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি কমলেও পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পাবে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শরীয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯০টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ৩৭টিতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ৪৬টিতে কমছে, ৭টি পয়েন্টে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। ১৩টি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাংলাদেশে বন্যা একটি সাংবার্ষিক সমস্যা। এ সমস্যার মোকাবিলা করেই যুগ যুগ ধরে বেঁচে আছে বাংলাদেশের মানুষ। চলমান বন্যার মোকাবিলায় সরকার শুধু নয়, সমাজের সব অংশকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াবেন— এমনটিই কাঙ্ক্ষিত। দুঃখজনক হলেও সত্য, বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি ত্রাণ তৎপরতার বাইরে এনজিও এবং সামাজিক সংগঠনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। মানুষের বিপদের দিনে তারা সক্রিয হবেন— এমনটিই আমরা দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর