শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ খাতের অগ্রযাত্রা

সিস্টেম লস কমিয়ে আনতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বিদ্যুৎ খাতে বর্তমানে সরকার ভর্তুকি দিলেও ভবিষ্যতে হয়তো আর ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে না। গ্রাহকদের প্রকৃত দাম দিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে। বিদ্যুৎ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য খুবই তাৎপর্যের দাবিদার। একবিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক যুগে বিদ্যুৎ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তি বা পারিবারিক ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার যেমন জীবনের অনুষঙ্গ বলে বিবেচিত হচ্ছে, তেমন উন্নয়ন বা সমৃদ্ধির চাবিকাঠি হিসেবেও বিদ্যুতের ব্যবহার ভূমিকা রাখছে। কল-কারখানা চালাতে বিদ্যুতের কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। দেশকে অগ্রগতির পথে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে বর্তমান সরকার তাত্ক্ষণিকভাবে রেন্টাল পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। রেন্টাল পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ বেশি হলেও তা সময়ের চাহিদা পূরণে অবদান রাখে। চাহিদা পূরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পাশাপাশি বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানিও শুরু হয় বর্তমান সরকারের আমলে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী তার সরকারের আমলের প্রথম মেয়াদে ১৬০০ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০৯ সালে আবার যখন তিনি ক্ষমতায় আসেন তখন দেখেন বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। তার সরকারের আমলে মোট ২৪ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩৫টি বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে ১২ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ও বর্তমানে ১০১টি বিদ্যুেকন্দ্র চালু রয়েছে। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ খাতে ভবিষ্যতে ভর্তুকি প্রত্যাহারের যে আভাস দিয়েছেন তাতে ভোক্তাদের আপত্তি থাকার কথা নয়। তবে বিদ্যুৎ খাতে যে অপচয় ঘটছে, সিস্টেম লসের নামে যে চুরি হচ্ছে—তা বন্ধেও সরকারকে কড়া হতে হবে। চুরি বন্ধ করা সম্ভব হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কিছুটা হলেও যে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে, তা সহজেই অনুমেয়।

সর্বশেষ খবর