ইসলামে শ্রমের মর্যাদা অপরিসীম। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) সন্ধান করবে।’ সূরা জুমা, আয়াত ১০। আল্লাহ সূরা বালাদের ৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শ্রমনির্ভর করে।’ একজন শ্রমিক তার শ্রম বিক্রি করে জীবিকার প্রত্যাশায়। শ্রমের মূল্য সে যাতে প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে পায় এমনটিই নিশ্চিত করা হয়েছে ইসলামী বিধানে। এ সম্পর্কে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ ‘শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি পরিশোধ করতে হবে।’ সুনানে ইবনে মাজাহ। তিনি পরিশ্রম করে যারা জীবিকা নির্বাহ করে তাদের আল্লাহর বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেছেন। শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদাকে আকাশছোঁয়া করা হয়েছে এ অভিধার মাধ্যমে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে পানি বহন করতেন। নিজের জুতা নিজে সেলাই করতেন। মসজিদ নির্মাণ, পরিখা খননসহ সামাজিক কাজে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আল্লাহর নবীর শ্রমের মাধ্যমে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শ্রমিকের পারিশ্রমিক নির্ধারণ না করে শ্রমিক নিয়োগ দিতে নিষেধ করেছেন। নাসায়ি। শ্রমজীবীদের প্রতি রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতটা দরদি ছিলেন তার প্রমাণ মেলে বায়হাকির একটি হাদিসে। জনৈক ব্যক্তি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমার খাদেম (গৃহপরিচারক) আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অন্যায় করে, (এখন আমি তার সঙ্গে কেমন আচরণ করব?) রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘দৈনিক তাকে সত্তরবার ক্ষমা করবে।’ ইসলামে শ্রমে নিয়োগের ক্ষেত্রে শ্রমিকের যোগ্যতা, সক্ষমতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘অধীনদের জন্য খাবার ও পোশাকের ব্যবস্থা করবে, তাদের ওপর সাধ্যাতীত কাজ চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।’ মুসলিম। সোজা কথায় কোনো শ্রমিকের ওপর সাধ্যাতীত কাজ চাপানো ইসলামের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।