রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

দূষণের শিকার জনজীবন

অস্তিত্বের স্বার্থেই চাই কার্যকর পদক্ষেপ

দেশের জনজীবন নানা দূষণের চক্রবালে বিপন্ন হয়ে পড়ছে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের ফলে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশের পরিবেশ। বায়ু, পানি ও কাজের পরিবেশের দূষণ এবং শিশুদের ওপর ভারী ধাতু সিসার প্রভাবে বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। আর ভয়ঙ্কর প্লাস্টিক দূষণে বছরে ক্ষতি হয় ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্লাস্টিক বর্জ্যরে জন্য সিটি করপোরেশনগুলোর আলাদা গ্রেডিং ও ব্যবস্থাপনা না থাকায় গৃহস্থালির প্রাকৃতিক বা অর্গানিক বর্জ্যও কাজে লাগানো যাচ্ছে না। প্রাকৃতিক বর্জ্যরে সঙ্গে মিশে এসব প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশে। সরাসরি দূষণের পাশাপাশি জলাশয়ে মিশে জলজ প্রাণীর জীবনচক্রে প্রভাব ফেলছে পলিথিন ও প্লাস্টিক। এ ছাড়া বায়ুদূষণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও ক্যান্সার বাড়ছে। বছরে বায়ুদূষণে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সমীক্ষা-২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু, পানি ও কাজের পরিবেশের দূষণ এবং শিশুদের ওপর ভারী ধাতু সিসার প্রভাবে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তা দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ। ৭১৯টি তৈরি পোশাকশিল্পের ওয়াশিং ও ডাইং কারখানা থেকে প্রতিদিন রাজধানীর চারপাশের নদ-নদীতে বর্জ্য এসে পড়ছে। এটি দূষণের অন্যতম উৎস। রাজধানীর ৫৯টি এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো তীব্র মাত্রায় সিসা-আক্রান্ত বা হট স্পট। এসব এলাকার পানি ও মাটিতে আরও পাওয়া গেছে আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, ক্ষুদ্র বস্তুকণা, কীটনাশক ও সালফার-ডাইঅক্সাইডের মতো মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বস্তু। রাজধানীতে শুধু সিসাদূষণের শিকার ৬ লাখ মানুষ। আর তার বেশির ভাগই শিশু। দূষণের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক শিশুরা। অস্তিত্বের স্বার্থেই সব ধরনের দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণেও নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। বিশেষ করে রাজধানীর বায়ুদূষণ রোধে ঢাকার চারপাশের ইটভাটার দিকে নজর দিতে হবে। যেসব কারণে মানুষ দূষণের শিকার হচ্ছে তা বন্ধে নিতে হবে কার্যকর উদ্যোগ।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর