মালয়েশিয়ায় দীর্ঘদিন বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। রেমিট্যান্স খাতে সৌদি আরবের পর সর্বাধিক অর্থ আসত যে দেশ থেকে, সে দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশিদের জন্য বাজার উন্মুক্ত হবে কি না অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দুই মাসেও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর কারিগরি বিষয়গুলোই চূড়ান্ত করতে পারেননি বাংলাদেশের কর্তাব্যক্তিরা। উল্টো মালয়েশিয়াকে চিঠি দিয়ে নতুন করে যৌথ পরামর্শক সভার জন্য তারিখ চাওয়া হয়েছে। নতুন করে পাঠানো এ চিঠির কারণে দীর্ঘসূত্রতার আশঙ্কায় ভুগছেন মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা। ফলে দ্রুততম সময়ে লক্ষাধিক কর্মী নেওয়ার যে প্রক্রিয়া চলছিল সেখানে সোর্স কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশের পরিবর্তে নেপালকে বেছে নেওয়ার কথাও ভাবছেন তাঁরা। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির আমলাতান্ত্রিক তামাশায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে যারা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তাদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। অনেকের পাসপোর্টের মেয়াদ এমনকি সে দেশে কাজ নিয়ে যাওয়ার বয়সও শেষ হওয়ার পথে। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সমঝোতা স্মারক সইয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য খুলে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। প্রায় ৪০ মাস পর কর্মী পাঠানো দেশ হিসেবে আবারও যুক্ত হয় বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করলেও বাংলাদেশের আমলারা জটিলতা সৃষ্টিতেই নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন। তারা এমন এক পদ্ধতি চালু করতে চান যেখানে পকেট স্ফীত হবে। এর আগেও অভিন্ন তামাশায় থেমে গিয়েছিল মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুবর্ণ সুযোগ। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের কর্মীদের সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়। যে টাকা খরচ করে তারা বিভিন্ন দেশে যান তা ওঠাতে তাদের বাড়তি শ্রম ও মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে ছলচাতুরী না হলে সবচেয়ে কম খরচে যাওয়া সম্ভব হবে। বাড়বে দেশের রেমিট্যান্স আয়। তবে সবকিছুর আগে সময় ক্ষেপণ বন্ধ করে আসল কাজ সম্পন্ন করতে হবে।