শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

মাছরাঙা

মাছরাঙা

মাছরাঙা খাটো পুচ্ছ, বড় মাথা এবং লম্বা, ভারী, সুচালো ঠোঁটসহ আঁটোসাঁটো গড়নের পাখি। পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৯৪ প্রজাতির মাছরাঙা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও নিউগিনিতেও মাছরাঙার অনেক প্রজাতি আছে। বাংলাদেশে ১২ প্রজাতির মাছরাঙা আছে। মাছরাঙার ঠোঁট আনুপাতিক হারে বড়, বেশ মোটা, সাধারণত চোখা বা সামান্য বাঁকানো আগাসহ লম্বা ও ঋজু। মাছরাঙারা নানা আকার ও ওজনের হয়; ৪০ সেমির বেশি লম্বা ও প্রায় ৪০০ গ্রাম ওজন থেকে ১০ সেমি লম্বা ও ১০ গ্রামের কিছু বেশি ওজন পর্যন্ত দেখা যায়। পালক সাধারণত চড়া রঙের, নীল, সবুজ, বেগুনি ও লালচে বা বাদামি আঁচসহ ধাতব ঔজ্জ্বল্যে ঝলমল, তাতে  প্রায়ই আলতোভাবে থাকে সাদা বা কালো দাগ। ডানা সাধারণত খাটো ও গোল, অন্যদিকে লেজ খুব খাটো থেকে অনেকটা লম্বাও হয়। মাছরাঙা নানা ধরনের জলজ আবাস ও বনে বসবাস করে। এক জোড়া পাখিই একটি স্বাভাবিক ইউনিট, যারা এককভাবে কিংবা কিছুটা আলগা ধরনের কলোনিতে বাসা বাঁধে, তবে বাসা তৈরিতে সাহায্যসহ সমবায়ী প্রজননের চলও আছে। বাসা হলো গাছের স্বাভাবিক খোড়ল, মাটির ঢালে বা উইয়ের ঢিবিতে অন্য পাখির খোঁড়া গর্ত, কিংবা গাছের পচা গুঁড়ির ফোকর। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি উভয়েই ঠোঁট দিয়ে মাটি বা পচা কাঠ আলগা করে গর্ত খোঁড়ে এবং পায়ের সাহায্যে মাটি বা কাঠের গুঁড়া গর্তের বাইরে ছুড়ে ফেলে। গর্তের শেষে একটি চওড়া প্রকোষ্ঠ থাকে যেখানে সরাসরি মেঝের ওপরই পাখি ডিম পাড়ে। বাসা খোঁড়ার সময় পরিত্যক্ত মলমূত্র, ওগলানো খাদ্যের বড়ি, উচ্ছিষ্ট ইত্যাদিতে দূষিত গর্ত এক ধরনের তীব্র দুর্গন্ধে ভরে ওঠে। ইউরেশীয় মাছরাঙা প্রজাতির মতো খুদে মৎস্যভুক মাছরাঙার ছানারা বাসা ছাড়ার আগে আট সপ্তাহ পর্যন্ত মা-বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকে। শিকারি পাখিদের কাছে মাছরাঙার মাংস নাকি বিস্বাদ ঠেকে। মাছরাঙা ছোট মাছ, ব্যাঙ ও বড় বড় জলজ পোকামাকড় ধরার জন্য গাছের ডালে অনড় বসে থাকে। শিকার ধরার জন্য পানির  দিকে মাথা নিচু করে ছোঁ মারে, প্রায়ই পানির ভিতর ঢুকে যায়, শিকার নিয়ে ডালে ফিরে আসে, শিকারকে কয়েকবার ডালে আছাড় মারে, তারপর শূন্যে ছুড়ে দিয়ে মাথার দিক থেকে গিলে ফেলে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর