শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক আত্মঘাতী যুদ্ধ

মস্কোর সুমতি দেখতে চায় বিশ্ববাসী

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের নেতৃত্ব যুদ্ধবাজ জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের বদলে সেনাপ্রধান ভ্যালোরি গেরাসিমভের হাতে অর্পণ করেছেন। গত অক্টোবরে রুশ সেনাবাহিনীর ‘কঠোরতম জেনারেল’ হিসেবে পরিচিত সের্গেই সুরোভিকিনের হাতে ইউক্রেন যুদ্ধের দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তবে তিন মাসের মধ্যে তাকে পরিবর্তন করা হলো। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় একের পর এক সামরিক পরাজয়ের পর পূর্ব ইউক্রেনে অগ্রগতি ঘটছে বলে রাশিয়া দাবি করার পর পরই এ রদবদল ঘটল। জেনারেল গেরাসিমভ, ২০১২ সাল থেকে চিফ অব জেনারেল স্টাফ পদে রয়েছেন। বলা হয়, তিনি সোভিয়েত-পরবর্তী যুগের রাশিয়ান চিফ অব জেনারেল স্টাফদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। জেনারেল সুরোভিকিন এখন তার ডেপুটি। সিরিয়ায় রাশিয়ার অভিযান এবং বিশেষ করে আলেপ্পো শহরে ভারী বোমা বর্ষণসহ পূর্ববর্তী যুদ্ধগুলোয় তার নৃশংস কৌশলের জন্য জেনারেল সুরোভিকিনকে ‘জেনারেল আর্মাগেডন’ নামেও অভিহিত করা হয়েছে। অক্টোবরে অভিযানের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য প্রচারণা শুরু করে। এতে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক কনকনে শীতের মধ্যে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীন এবং কলের পানি ছাড়া ছিল। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, জেনারেল সুরোভিকিনকে প্রতিস্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন শাখার মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং রুশ বাহিনীর ব্যবস্থাপনার মান ও কার্যকারিতা উন্নত করা।’ যে কারণেই ইউক্রেন যুদ্ধের অধিনায়কত্বের পরিবর্তন করা হোক না কেন, বিশ্ববাসীর দাবি এই ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ বন্ধ হোক। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষ মানবেতর পর্যায়ে পতিত হয়েছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ পতিত হয়েছে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে। বাংলাদেশকেও মোকাবিলা করতে হচ্ছে যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট কঠিন অবস্থার। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশের বাড়তি উদ্বেগ রয়েছে। দুই দেশই ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ মিত্র। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশই ছিল সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। আমরা আশা করব, ইউক্রেন যুদ্ধের অধিনায়কত্ব বদলানো নয়, এই কাণ্ডজ্ঞানহীন যুদ্ধ থেকে সরে আসার সঠিক এবং বিজ্ঞচিত সিদ্ধান্ত নেবে মস্কো। কিয়েভের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে নেবে যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর