কোচ বাংলাদেশে বসবাসকারী অন্যতম প্রাচীন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। কোচরা মাতৃভূমি কোচবিহার পরিত্যাগ করে ময়মনসিংহ জেলায় আবাস গড়ে তোলে। বর্তমানে শেরপুরের ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবর্দী উপজেলায় তাদের বসবাস। তাদের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। কোচ সম্প্রদায় আটটি দলে বিভক্ত যথা- ওয়ানাং, হরিগাইয়া, সাতপাড়ি, দশগাইয়া, চাপ্রা, তিনথেকিয়া, শংকর ও মারগান। তারা এ দলগুলোকে ভাগ বলে অভিহিত করে। প্রতি ভাগের রয়েছে অনেক গোত্র। কোচরা গোত্রকে নিকিনি বলে। কোচ সমাজ পিতৃপ্রধান। তবে পরিবারের সন্তানসন্ততি মায়ের গোত্রনাম গ্রহণ করে। পুত্রসন্তানরাই পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। নিজ গোত্র বা নিকিনির মধ্যে বিয়ে নিষিদ্ধ। যৌথ ও একক পরিবার প্রথা চালু থাকলেও বর্তমানে একক পরিবারের সংখ্যাই বেশি। কোনো সমস্যার উদ্ভব হলে কোচরা সাধারণত সামাজিকভাবে তা নিরসন করে। কোচ মেয়েরা বিয়ের পর স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য স্বামীগৃহে চলে যায়। কোচ মহিলারা সিঁথিতে সিঁদুর পরে এবং হাতে চুড়ির সঙ্গে শাঁখা ব্যবহার করে। কোচ সমাজে এক বিবাহ প্রথাই প্রচলিত। তবে কোনো কোনো পুরুষকে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করতেও দেখা যায়। কোচদের প্রধান খাদ্য ভাত। তাদের অধিকাংশই আমিষভোজী। তারা শাকসবজি, ডাল, মাছ, ডিম ও মাংস আহার করে। তবে গোমাংস আহার করে না। শূকরের মাংস তাদের অতি প্রিয়। খরগোশ, শজারু প্রভৃতির মাংস পছন্দ করে। মাছ ছাড়াও কচ্ছপ, কুঁচিয়া প্রভৃতি তাদের প্রিয়। রান্নার কাজে তারা তেল, ক্ষার বা সোডা এবং শুঁটকি মাছ ব্যবহার করে। চালের গুঁড়া ও সোডা সহযোগে রান্না করা শূকরের মাংস তাদের কাছে উপাদেয়। বিভিন্ন পালপার্বণে তারা চালের পিঠা তৈরি করে। কোচরা মদপান করে। তবে যারা গুরুর কাছে দীক্ষামন্ত্র গ্রহণ করেছে, তারা মদ-মাংস পরিহার করে চলে। দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যসামগ্রীর প্রতি তাদের আগ্রহ স্বাভাবিক। নানা উৎসব কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠানে মাছ-মাংসের পাশাপাশি তারা ক্ষীর, পায়েস, দই, মিষ্টি প্রভৃতি পরিবেশন করে। কোচ পুরুষরা ধুতি, লুঙ্গি, জামা, গেঞ্জি প্রভৃতি ব্যবহার করে। মহিলাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাক রয়েছে, যা তারা ঘরোয়া পরিবেশে ব্যবহার করে। এ পোশাককে লেফেন বলা হয়। কোচ মহিলারা জামা অথবা গেঞ্জির সঙ্গে লেফেন ব্যবহার করে। কোচরা একদিকে যেমন দুর্গাপূজা, কালীপূজা, সরস্বতী-পূজা, লক্ষ্মীপূজা সম্পন্ন করে তেমনি আদিধর্মের দেবদেবীরও পূজা করে। তাদের আদিধর্মের প্রধান দেবদেবী হলো ঋষি এবং তার পত্নী যোগমায়া। কোচরা এ দুজনকেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করে। দেবী কামাখ্যাও কোচ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান দেবী। আদিধর্মের দেবদেবীর পূজা তাদের নিজস্ব পুরোহিতরাই সম্পন্ন করে। পুরোহিতদের দেউসী ও আজেং নামে অভিহিত করে।
শিরোনাম
- সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
- ইলিশের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো যাবে না : মৎস্য উপদেষ্টা
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারে শুরু জুলাইয়ে
- ‘ভারতের অন্যায় আবদারের কাছে আমরা মাথানত করবো না’
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : নায়াব ইউসুফ
- চাঁদা আদায় বন্ধের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
- রায় মেনে ভারতকে সিন্ধু পানি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাল পাকিস্তান
- ভোটকেন্দ্র নীতিমালার গেজেট প্রকাশ, ডিসি-এসপির কমিটি ও ইভিএম বাদ
- গাজা যুদ্ধে সেনা হতাহতের সংখ্যা জানাল ইসরায়েল
- সাজা মওকুফ হওয়ায় মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১৩ আসামি
- মঙ্গলবার থেকে আমদানি-রফতানির সব সনদ অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক
- ‘জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে দ্রুত সময়ে নির্বাচনের ঘোষণা সরকার’
- এবার নিউইয়র্কের তহবিল বন্ধের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
- স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘মমতা’ প্রকল্প বন্ধের খবরে দুশ্চিন্তায় চরাঞ্চলের প্রসূতিরা
- ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে সরকার
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
- বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা
- আমেরিকায় যেভাবে ভয়ানক আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘লাফিং গ্যাস’
- দল নিবন্ধন : আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে ইসির ৭ কর্মকর্তা
- বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মতবিনিময় সভা
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোচ
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর