বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভূমিকম্পের ঝুঁকি

সময় থাকতেই প্রস্তুতি নিতে হবে

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ছয় হাজারেরও বেশি বাড়িঘর স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অপরিসীম ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টিকারী এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের যে সব এলাকা ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো রয়েছে ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে। রাজধানী ঢাকা ভূমিকম্পের উৎসস্থল থেকে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরে থাকলেও বিল্ডিং কোড না মানায় ৭ বা ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ধসিয়ে দিতে পারে ঘনবসতিপূর্ণ এই মেগা সিটির হাজার হাজার ভবন। এতে কী পরিমাণ প্রাণহানি যে ঘটতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। সাধারণত প্রতি ১০০ বছর পর বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। সবশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ভারতের আসামে ১৮৯৭ সালে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প আঘাত হানলে ২৫০ কিলোমিটার দূরবর্তী ঢাকার ১০ ভাগ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢাকা শহরের ৩০৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৩৫ শতাংশ পোক্ত লাল মাটি। বাকি ৬৫ শতাংশ এলাকা নরম কাদামাটি ও বালুমাটির এলাকা। ৫-৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে নরম মাটিতে তৈরি ভবন ভেঙে বা হেলে পড়তে পারে। আর্থ অবজারভেশন সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও মিয়ানমার- এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকার ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ২০০৯ সালে পরিচালিত মিডিএমপি ও জাইকার যৌথ জরিপের তথ্যচিত্র আতঙ্কিত হওয়ার মতো। এতে বলা হয়, ঢাকায় ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে ১ লাখ ৩৫ হাজার ভবন। এ ধরনের বিপর্যস্ত অবস্থায় তৈরি হবে ৭ কোটি টন কংক্রিটের স্তূপ। অথচ ভূমিকম্প হলে উদ্ধার কাজ চালানোর তেমন কোনো প্রস্তুতিই বাংলাদেশের নেই। বিল্ডিং কোড না মেনে বিল্ডিং তৈরির প্রবণতায় বিপদ ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে। এ ব্যাপারে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর