শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাই কোর্টের উদ্বেগ

ছাত্ররাজনীতির বিপথগামিতা বন্ধ হোক

দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে র‌্যাগিংয়ের নামে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাই কোর্ট বেঞ্চ। বুধবার কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় রিট আদেশের সময় বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিব আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ শিক্ষার্থী নির্যাতন সম্পর্কিত দুটি তদন্ত প্রতিবেদন সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর আদেশ দেন। নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থী, অবহেলাকারী হল প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আগ পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা এবং তাদের সহযোগীদের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ও তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে। আদালত বলেন, সম্প্র্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে অপ্রত্যাশিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। এসব শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিতরে ঢুকে সাধারণ শিক্ষার্থী, বিশেষ করে নবাগতদের নির্যাতন করে। এ ধরনের অবাধ্য ছাত্ররা শিক্ষার মানসম্মত পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করছে। এমনকি নিজেদের দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তারা দলের পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত করছে। আদালত বলেন, বিচার আমরা করছি না। বিচার করবে বিশ্ববিদ্যালয়। তারা রিপোর্ট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখে সিদ্ধান্ত দেবে। আমরা উদ্বিগ্ন অন্য সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে। রাজনৈতিক আশ্রয়ের অপব্যবহার করে দলের ভাবমূর্তিসহ ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নষ্ট করে দিচ্ছে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ কর- এমন কথাও উঠতে পারে। তবে ছাত্ররাজনীতির যে প্রয়োজন তা আমরা আমাদের ইতিহাস থেকে দেখেছি। কিন্তু এটাকে নষ্ট ও ক্ষুণœ করার জন্য অনেকে না বুঝে করে, অনেকে বুঝে করে। এটা থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আদালতের মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যে ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী নামের নারী মাস্তানরা শিক্ষার্থী নির্যাতনে জড়িত তারা তাদের গৌরবোজ্জ্বল সংগঠনের ভাবমূর্তিকেই কলঙ্কিত করেছে। যা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর