শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

মজুদবিরোধী আইন

মুনাফাখোরদের নিরস্ত করবে

খাদ্যপণ্য মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি অসৎ ব্যবসায়ীদের একটি সনাতন কৌশল। এ অপকৌশল ঠেকাতে খাদ্যপণ্য সরকার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি মজুদকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন পাসের প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। এতে নির্ধারিত মাত্রার বেশি খাদ্যপণ্য মজুদ করলে যাবজ্জীবন বা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল-২০২৩’ আইনে পলিশিং ও কাটিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে তৈরি মিনিকেট নামে বাজারে কোনো প্রকার চাল বিক্রি ও সরবরাহ করাকে আইনগতভাবে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ জন্য দুই বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। বিলে খাদ্যপণ্য/খাদ্যদ্রব্য বলতে দানাদার খাদ্যদ্রব্য যথা- চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদিকে বোঝানো হয়েছে। আইনের উদ্দেশ্য পূরণে দেশে ‘বিশেষ আদালত’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। কিছু অপরাধের বিচার মোবাইল কোর্টে করার বিধানও এ আইনে রয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে বা মজুদসংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে, তা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এ ধরনের অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য। বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য নিয়ে মুনাফাখোরী মনোভাব ভোক্তাদের জীবনকে প্রায়ই অতিষ্ঠ করে তোলে। অতি সম্প্রতি পিঁয়াজের দাম এক মাসের মধ্যে তিন গুণ বেড়ে যাওয়া যে অসৎ মজুদদারদের কারসাজি তা সহজে অনুমেয়। সংসদে উত্থাপিত বিলে খাদ্যপণ্যের বদলে নিত্যপণ্য এবং সেখানে পিঁয়াজ, চিনি, ভোজ্য তেলের নাম যোগ করা হলে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। খাদ্যপণ্যের অনৈতিক মজুদ রোধে এ ধরনের একটি আইনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তবে তা যাতে হয়রানির ক্ষেত্রে ব্যবহার না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর