মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

দ্বৈতশাসন পদ্ধতি

ক্লাইভ-প্রণীত শাসনপদ্ধতিকে সাধারণত দ্বৈতশাসন-ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করা হয়। এ ব্যবস্থা ১৭৬৭ সাল অবধি ভালোভাবেই কার্যকর ছিল। ওই বছরই ক্লাইভ এ দেশ থেকে বিদায় নেন। ক্লাইভের সমর্থনে রেজা খান দক্ষতার সঙ্গেই কোম্পানির রাজ্য শাসনে সক্ষম হন। তবে পৃষ্ঠপোষক ক্লাইভের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের পর রেজা খানকে ফোর্ট উইলিয়ামের উচ্চাভিলাষী কর্মকর্তাদের চরম বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়। ফোর্ট উইলিয়ামের এসব কর্মকর্তা রাতারাতি ধনী হওয়ার বাসনায় রেজা খানের প্রভাব-প্রতিপত্তি হ্রাসে বদ্ধপরিকর হন। তাঁরা পর্যায়ক্রমে রেজা খানের হাত থেকে প্রশাসন নিজেদের হাতে তুলে নেন। তাঁদের এ হস্তক্ষেপের বিষয় প্রথম স্পষ্ট হয়ে ওঠে বিভিন্ন জেলায় ইউরোপীয় তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের মাধ্যমে। তাঁদের আপাতদৃষ্টে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ইতিহাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু রেজা খান অভিযোগ করতে থাকেন, এই নবনিযুক্ত কর্মকর্তারা পল্লী অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। সরাসরি দেশ শাসনের ক্ষেত্রে পরের ব্যবস্থাটি ছিল মুর্শিদাবাদে (বাংলার জন্য) ও পাটনায় (বিহার ও ওড়িশার জন্য) দুটি রাজস্ব পরিষদ (Revenue Councils) প্রতিষ্ঠা। ইউরোপীয় তত্ত্বাবধায়করা এ দুই পরিষদের আওতায় কাজ করতে থাকেন। রেজা খান ফোর্ট উইলিয়াম পরিষদের কাছে এ মর্মে অভিযোগ করতে থাকেন, অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে কোম্পানি কর্মকর্তারা দেশের পল্লী জনপদগুলোয় লুটপাট চালাচ্ছে। কিন্তু প্রতিকারের পরিবর্তে এসব অভিযোগ ফোর্ট উইলিয়াম কর্তাদের তাঁর বিরুদ্ধে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে। এর পরিণতিতে কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে মন্দা দেখা দেয় এবং ফলে ১৭৬৯ সালের মহাদুর্ভিক্ষ সংঘটিত হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর