সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন

তালিকা তৈরি ও চিঠি ইস্যুতেই দায় শেষ

রাজধানীতে কিংবা দেশের অন্যত্র যেসব ভবনে অগ্নিকান্ডে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি ঘটেছে তার সবকটিই ছিল অগ্নিঝুঁকির মুখে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, তা দেখভালের দায়িত্ব যাদের তারা অগ্নিঝুঁকির বিষয়টি জানতেন। এজন্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকাও করা ছিল। ইস্যু করা হয়েছে চিঠি। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কারণটি ওপেন সিক্রেট। যারা তালিকা ও চিঠি ইস্যু করেন তাদের সন্তুষ্ট করার ক্ষমতা রাখেন ভবন মালিকরা। আর সন্তুষ্ট হওয়ার পর তালিকা ও চিঠির ব্যাপারে তারা নীরব থাকেন। এটি ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই কোনো ধরনের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ছাড়াই চলছে ভবনের ব্যবহার। ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের চিঠি পেলেও কেয়ার করেন না ভবন মালিকরা। ফায়ার সার্ভিসের দাবি, তালিকা তৈরির বাইরে তাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। অ্যাকশনের বিষয়টি দেখবে রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। তবে এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন নগরবিদরা। তাদের অভিমত, একটি ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না দেখে কীভাবে ব্যবসার লাইসেন্স দিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস? কেনইবা বারবার তালিকা করা হচ্ছে? রাজউক বলছে, ফায়ারসহ অন্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে অচিরেই অ্যাকশনে যাওয়া হবে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পর্যাপ্ত আইন আছে কিন্তু প্রয়োগের যথেষ্ট অভাব। ভবন নির্মাণের সঙ্গে অনেক সংস্থা রয়েছে। সবাই নিজস্ব লাইসেন্স বা ছাড়পত্র দিচ্ছে। সবাই কাজ করছে কিন্তু সমন্বয়হীনতার বড় অভাব। কোনো ঘটনা ঘটলে এক সংস্থা আরেক সংস্থার ওপর দায় চাপায়। যারা জননিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করেন, তাদের একই ছাদের নিচে নিয়ে আসা যায় কি না- প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন বিষয়টা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। জননিরাপত্তার স্বার্থেই অগ্নিঝুঁকির ভবন বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীর সিংহভাগ ভবনই ঝুঁকির মধ্যে। রাজউক ও সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য সংস্থার কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে দায়বোধ সৃষ্টি হলে বেইলি রোড ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর