আন্তর্জাতিক নারী দিবস

প্রতিষ্ঠিত হোক মানবিক মর্যাদা

প্রিন্ট ভার্সন

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার শপথ নেওয়ার মহিমান্বিত এ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে দুনিয়ার প্রায় সব দেশে। ১৯১০ সালে ডেনমার্কে অনুষ্ঠিত নারীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ দিনটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘও ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের স্বীকৃতি দেয়। তার পর থেকে প্রায় সব দেশেই দিনটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। মানবসমাজ নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কতটা এগোলো, সে বিশ্লেষণও করা হয় এই দিনে। বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের পথ হিসেবে নারী উন্নয়নকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারীর উন্নয়ন ছাড়া যে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়, তা অনুধাবন করে প্রতিটি সরকার এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এর ফলে দেশের রাজনীতিতে নারীরা দ্রুত স্থান করে নিতে সক্ষম হচ্ছেন। জাতীয় অর্থনীতিতে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে নারীর ভূমিকা। দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য পোশাকশিল্পে কর্মরত ৪০ লাখ শ্রমিকের সিংহভাগ নারী। এখনো এ দেশের নারীরা ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং সামাজিক অনাচারের শিকার। দেশের ৮০ ভাগ নারীই সহিংসতার শিকার কোনো না কোনোভাবে। এ সহিংসতা দেশজ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব নারীর ক্ষমতায়নে অন্তরায় হয়ে বিরাজ করছে। নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে কারও কারও আচরণ আইয়ামে জাহেলিয়াকেই যেন মনে করিয়ে দেয়। নিজেদের সভ্য সমাজের অংশ হিসেবে গর্ব করতে চাইলে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় যত্নবান হতে হবে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দেশ যত এগিয়ে যাবে, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ততটাই জাতীয় অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। ইভ টিজিং, বাল্যবিয়ে যৌতুকপ্রথা যুগ যুগ ধরে দেশের নারীদের জন্য অভিশাপ হিসেবে বিরাজ করছে। প্রায় সাড়ে তিন যুগ ধরে এ দেশে নারী প্রধানমন্ত্রীরা সরকারপ্রধান হিসেবে দেশ পরিচালনা করলেও নারী নির্যাতনের কালো অধ্যায়ের ইতি ঘটেনি। দূর হয়নি নারীর প্রতি বৈষম্য। এ লজ্জা এড়াতে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে যত্নবান হতে হবে।