অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রতি চরম অনীহা রয়েছে চলচ্চিত্রের বুকিং এজেন্ট এবং হল মালিকদের। তারা জয়া আহসানের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখোমুখি হতে চাইছেন না। কারণ, দর্শক এই অভিনেত্রীকে চলচ্চিত্রে একেবারেই গ্রহণ করেনি। চলচ্চিত্রের নিয়মিত দর্শকদের কাছে হালের অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহী তো বটেই, দ্বিতীয় সারির নায়িকা আঁচল, ববিদের যে গ্রহণযোগ্যতা আছে তার ধারেকাছেও নেই জয়া আহসানের। আর তাই জয়া আহসানের চলচ্চিত্র হলেই এড়িয়ে যান তারা।
আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে, ‘জিরো ডিগ্রী’ চলচ্চিত্রটি। জয়া আহসান থাকার কারণেই চলচ্চিত্রটি হাতে গোনা কয়েকটি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে। অথচ চলচ্চিত্রটি বছরজুড়ে ছিল আলোচনায়। অনিমেষ আইচের মতো মেধাবী নির্মাতা এবং মাহফুজ আহমেদের মতো জনপ্রিয় অভিনেতার চলচ্চিত্র হওয়া সত্ত্বেও শুধু জয়া আহসান থাকার কারণে ‘জিরো ডিগ্রী’ থেকে বেশির ভাগ হল মালিক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ক্রান্তিলগ্নে ‘জিরো ডিগ্রী’কে আশার আলো হিসেবেই দেখেছিলেন মিডিয়াপাড়ার সবাই।
সিনেমা হল কম পেলেও চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী ছবিটি নিয়ে। কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, এটা গল্পনির্ভর ছবি, শিল্পীনির্ভর নয়। শেষ পর্যন্ত দর্শক গল্পই দেখে, শিল্পী নয়। তাই প্রথমে সিনেমা হলের সংখ্যা অল্প হলেও ধীরে ধীরে দর্শক ছবিটি দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়বেন। ‘জিরো ডিগ্রী’ পরিবারের এই প্রত্যাশা পূরণ হোক— এ চাওয়া মিডিয়াপাড়ার সবারই।
বুকিং এজেন্ট এবং হল মালিকদের অনীহা জয়া আহসানের কপাল পোড়াবে বলেই মনে করেন চলচ্চিত্রপাড়ার মানুষ। কারণ, একটি চলচ্চিত্রকে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন তারা। তারাই চলচ্চিত্রের নিয়মিত দর্শকদের প্রতিনিধি। তাই দর্শক জয়ার ছবি দেখতে না চাওয়ায়, হল মালিকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
জয়া আহসানের কারণে এর আগে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী’ চলচ্চিত্রও বিতর্কিত হয়েছিল। সুন্দর গল্প এবং নির্মাণ থাকার পরও দর্শক ছবিটি দেখে বিরক্ত হয়েছিল জয়া আহসান থাকায়। শাকিব খানের বিপরীতে জয়াকে বেমানান এবং বয়স্ক দেখাচ্ছিল। পাশাপাশি বড়পর্দায় অভিনয়ে অপরিপক্বতা এবং নাচের দৈন্যতা ফুটে উঠেছিল।
চল্লিশোর্ধ্ব বয়স্ক জয়া নিজের অবস্থান টের পেয়েছেন বলেই ধারণা চলচ্চিত্রকর্মীদের। তাই নিজের চেহারা থেকে বয়সের ছাপ দূর করার জন্য নিয়মিত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নাচও শিখছেন।
জয়া আহসান চলচ্চিত্রে স্থায়ী হতে পারবেন না বলেই মনে করেন চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, জয়া আহসানকে আবার ছোটপর্দায়ই ফিরে যেতে হবে। বেশি দেরি করলে দুই কূল হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলেই ধারণা তাদের। অন্যদিকে চলচ্চিত্রে তিনি নিয়মিত অভিনয়ের চেষ্টা করে কিছু প্রযোজকের লগ্নিকৃত অর্থ ধ্বংস করবেন বলেই মত অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতার। এতে কিছু ভালো প্রযোজক হারানোর সম্ভাবনা প্রবল।