বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। যে কয়টি ম্যাচ খেলেছে একেবারে ছন্দহীন ছিল না। পারফরম্যান্স চোখ ধাঁধানো ছিল। পাঁচটি এক দিনের ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জয় আর একটি টেস্ট ম্যাচে পরাজয় নিয়ে বগুড়ার এ স্টেডিয়ামে পরিসংখ্যানও বেশ ভালো। সেই স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় না দীর্ঘ ১৯ বছর। এ মাঠে বগুড়ার ক্রিকেট ভক্তরা অপেক্ষায় আছেন মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, তানজিদ তামিমদের জন্মভূমিতে আবারও আন্তর্জাতিক ম্যাচের চার ছক্কার বাউন্ডারি দেখার।
আইসিসির স্বীকৃতি পাওয়ার পর বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে একটি মাত্র টেস্ট আর পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে টেস্টে বাংলাদেশ পরাজিত এবং চারটি ওয়ানডেতে জয় ও একটি ম্যাচে পরাজয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে এক ম্যাচে হারিয়ে পরেটিতে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। অবশ্য শ্রীলঙ্কাকে হারানোর প্রথমবারের মতো আনন্দটি বগুড়ায় নিয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এ ছাড়া কেনিয়ার বিরুদ্ধে একটি এবং জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচে জয় পায় বাংলাদেশ।
১৯৬২ সালে নির্মিত স্টেডিয়ামটি ২০০৩ সালের ৩ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বগুড়া শহীদ চান্দু ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি স্টেডিয়ামের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। প্রায় ১৮ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটিতে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর টানা ১৯ বছর বগুড়ায় বসেনি কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। আইসিসির স্বীকৃতির পরও বিসিবির আগের কমিটির বৈষম্যের শিকার হয়। বিসিবির কর্মকর্তারা এ মাঠকে রাজনৈতিক তকমা দিয়ে আর ব্যবহার করেননি। নিয়মমাফিক আইসিসির ভেন্যু তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। ম্যাচ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় স্টেডিয়ামের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। স্টাফ বেতন পরিশোধ থাকলেও আউটফিল্ড, পিচ, সংস্কার, ইনডোর, গ্যালারি, মিডিয়া বক্স, স্কোর বোর্ড, জিমনেশিয়াম এখন প্রায় অকেজো। বগুড়ার ক্রীড়া সংগঠক সিপার আল-বখতিয়ার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দ্বিতীয় সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর হাতে গড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম গত ১৯ বছর ছিল অবেহলিত। বগুড়ার স্টেডিয়ামটি শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। এ মাঠের উইকেট অত্যন্ত ভালোমানের হওয়ার পরেও বিসিবির নেতারা মাঠটি সরিয়ে নিয়ে যান। ম্যাচ না থাকায় সংস্কারসহ অবকাঠামোর কোনো উন্নয়নও করা হয়নি।
এ মাঠে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করার জোর দাবি জানান তিনি।