দুই বাংলার নাট্যদল নিয়ে উৎসব করলেন। কেমন হয়েছে?
'রবীন্দ্র নাট্য ও অন্যান্য' শিরোনামে উৎসব করেছি আমরা। এ উৎসবে রবীন্দ্র নাটকের পাশাপাশি প্রথিতযশা নাট্যকারদের সেরা নাটকগুলো মঞ্চায়ন করা হয়েছে। ভারতের পূর্ব-পশ্চিম নাট্যদলের 'রক্তকরবী' নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়েই উৎসবের পর্দা উঠেছিল। ওপার বাংলার চারটি নাট্যদল ছাড়াও এই উৎসবে বাংলাদেশের সাতটি নাটকের দল অংশগ্রহণ করেছে। আর উৎসবটি আমরা নিবেদন করেছি প্রয়াত নাট্যজন খালেদ খানকে।
খালেদ খান পদকও তো ঘোষণা করেছেন?
হ্যাঁ। সেরা নাটক এবং সেরা অভিনয়শিল্পী ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর দুইটি পুরস্কার প্রদান করা হবে।
মৌলিক নাটকের অভাবে আমাদের দেশের দলগুলো বিদেশি নাট্যকারদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?
আমাদের দেশে ভালো নাট্যকারের অভাব প্রকট। ভালো নাটক করতে গেলে দেশি-বিদেশি বিষয়টি না থাকাটাই উচিত। সংস্কৃতির সীমারেখা থাকা ঠিক নয়।
কিন্তু আমাদের প্রেক্ষাপট ও সংস্কৃতির সঙ্গে বিদেশি নাটকগুলো কতটা যুক্তিযুক্ত?
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক সমস্যাগুলো সার্বজনীন। সংস্কৃতির কোনো সীমারেখা নেই। তা ছাড়া বিদেশি নাট্যকারের নাটকগুলোর বিষয়বস্তু ঠিক রেখে আমরা আমাদের মতো রূপান্তর করছি। এতে দোষের কিছু না। আমাদের দর্শকরা ভালো নাটক পাচ্ছে।
মিডিয়ার সর্বত্রই পেশাদারিত্ব থাকলেও মঞ্চে এখনো পেশাদারিত্ব তৈরি হয়নি। মঞ্চে কীভাবে পেশাদারিত্ব তৈরি করা যায়?
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া মঞ্চে কখনো পেশাদারিত্ব তৈরি হবে না। পাশের দেশ ভারতে থিয়েটার শিল্পীদের জন্য সেলারি সিস্টেম চালু আছে। এ ছাড়া ভারতের সরকার মঞ্চনাটকের ক্ষেত্রে অনুদানও দিয়ে থাকে। আমাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেও মঞ্চে পেশাদারিত্ব তৈরি হচ্ছে না। সরকার ও ব্যবসায়ীরা এগিয়ে না এলে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা করা সম্ভব নয়। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো কনসার্টসহ নানা ক্ষেত্রে স্পন্সর করলেও মঞ্চের জন্য তাদের কোনো ক্যাটাগরি নেই।
দলগুলো ভেঙে যাচ্ছে নেতৃত্বের কারণে। ভাঙনরোধ করা কীভাবে সম্ভব?
দলের ভাঙনকে আমি খারাপ চোখে দেখি না। ভাঙনের ফলে নির্দেশক বাড়ছে, ডিজাইনার বাড়ছে, শিল্পী বাড়ছে। প্রতিভাবানদের স্পেস দেওয়া হচ্ছে না বলে তারা দলছুট হয়ে নতুন দল গঠন করছে।
মঞ্চনাটককে সমৃদ্ধির পথে উন্নীত করতে হলে কী করা দরকার বলে মনে করেন?
এ জন্য দলের শক্তি দরকার। পাশাপাশি দলকে সুশৃঙ্খল হতে হবে। সুশৃঙ্খল দলই পারে একটি ভালো প্রোডাকশন উপহার দিতে। এ ক্ষেত্রে ভালো নাটক বাছাই করতে হবে। পাশাপাশি শিল্পীদের চর্চা ও নিষ্ঠাও থাকতে হবে।
প্রাঙ্গণেমোর নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
এ বছরই আমরা তিনটি নতুন নাটক মঞ্চে আনব। দলের ভিতর থেকে দুজন নির্দেশককে ইন্ট্রোডিউস করব। এ ছাড়া নিয়মিতকাজের অংশবিশেষ হিসেবে প্রতি দুই বছর অন্তর প্রাঙ্গণেমোর-এর উৎসব তো থাকবেই।
* মোস্তফা মতিহার